

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


৯/১১ হামলার ভয়াবহতার জন্য ‘টুইন টাওয়ারের নগরী’ নামে পরিচিত নিউইয়র্ক আবারও আলোচনায় এসেছে। এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু রাজনীতি—বিশেষত মেয়র নির্বাচন।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় যখন নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্যকেন্দ্র ধসে পড়ে, তখন শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, পাল্টে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।
সেই ঘটনার পর বিমানযাত্রীদের নিরাপত্তা তল্লাশি থেকে শুরু করে ইসলামভীতির উত্থান—সবকিছুই নতুন বাস্তবতা তৈরি করে।
দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছর পর সেই শহরেই উঠেছে নতুন প্রশ্ন—এই ইতিহাসবাহী নগরী কি এবার একজন মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে?
আজ (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচন। শুরুতে চারজন প্রার্থী লড়াইয়ে থাকলেও এখন আলোচনায় মূলত তিনজন।
ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে লড়ছেন তরুণ রাজনীতিক জোহরান মামদানি (৩৩), রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া (৭১) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো (৬৭)।
বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস (৬৫) প্রাথমিকভাবে লড়াইয়ে থাকলেও পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। এদিকে কুয়োমো পেয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন, যা রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়াকে বেশ দুর্বল অবস্থায় ফেলেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জোহরান মামদানি বলেন, “৯/১১ দিনটি আজও বহু নিউইয়র্কবাসীর কাছে এমন এক স্মৃতি, যা তাদেরকে ‘অন্য মানুষ’ হিসেবে দেখার অভিজ্ঞতা মনে করিয়ে দেয়।”
অন্যদিকে, কুয়োমোর নির্বাচনী ওয়েবসাইটে জোহরানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ছড়ানো হয়েছে—তাকে হামলাকারীদের সহানুভূতিশীল হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা চলছে।
রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বলেছেন, “৯/১১ নিউইয়র্কের সবচেয়ে অন্ধকার দিন ছিল। আমি নির্বাচিত হলে প্রথম সাড়া দানকারীদের গুরুত্ব দেব।”
জরিপে এগিয়ে মামদানি
বিভিন্ন গণমাধ্যমের জরিপে দেখা যাচ্ছে, অভিবাসী পরিবারের সন্তান জোহরান মামদানি প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের যৌথ জরিপে ৪৬ শতাংশ ভোটার জোহরানের পক্ষে মত দিয়েছেন, যেখানে কুয়োমো পেয়েছেন ২৪ শতাংশ এবং স্লিওয়া ১৯ শতাংশ।
অন্যদিকে, দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বোস্টনের এমারসন কলেজ, পিক্স ইলেভেন ও দ্য হিলের যৌথ জরিপেও মামদানি এগিয়ে আছেন—৪৩ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে।
উগান্ডায় জন্ম নেওয়া এই রাজনীতিক মাত্র সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। অর্থাৎ, ২০০১ সালের টুইন টাওয়ার হামলার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
আজ সেই একই শহরে তিনি মেয়র পদে লড়ছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
২০২১ সালের নির্বাচনে নিউইয়র্কে ভোটার ছিল প্রায় ৫৬ লাখ। ধারণা করা হচ্ছে, এবার তা ৬০ লাখ ছাড়াতে পারে।
এখন নিউইয়র্কবাসীর মধ্যে প্রশ্ন একটাই—৯/১১–এর শহর কি এবার তার ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছে, একজন মুসলিম মেয়র নির্বাচনের মধ্য দিয়ে?
মন্তব্য করুন