

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সাম্প্রতিক কয়েক দফা ভূমিকম্পে মানুষজনের মধ্যে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই স্বস্তির বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) চলতি দায়িত্বে থাকা পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম।
তিনি জানিয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হওয়া সিসমোলজির দৃষ্টিতে অস্বাভাবিক কিছু নয়।
‘এগুলো মূলত আফটার শক’
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, বড় ঝাঁকুনির পর যে ছোট ছোট কম্পন দেখা যায়, সেগুলোই আফটার শক— যা প্রধান ভূমিকম্পের শক্তি ধীরে ধীরে নিঃসরণের স্বাভাবিক ধাপ।
তার মতে, আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত হালকা কম্পন টের পাওয়া যেতে পারে, তবে বর্তমানে বড় ধরনের কোনো ভূমিকম্পের আশঙ্কা নেই।
তার ব্যাখ্যানুযায়ী, ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পকে ‘মেইন শক’ হিসেবে ধরা হচ্ছে। বড় ভূমিকম্পে আগে কিছু প্রি-শক এবং পরে আফটার শক দেখা যায়—সাম্প্রতিক সব কম্পনই সেই ধারাবাহিকতার অংশ।
গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক বাড়াবেন না, পরপর কম্পন হওয়ার পর নরসিংদী, বাড্ডা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। কিছু জায়গায় ‘দুই ঘণ্টা পর বড় ভূমিকম্প হবে’—এ ধরনের গুজবও ছড়ায়। বিএমডির পরিচালক এসব গুজবকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন।
তার বক্তব্য, “ভূমিকম্প আগে থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করা কখনোই সম্ভব নয়। কেউ যদি সময় বেঁধে বড় ভূমিকম্পের কথা বলে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর কিছু এলাকায় নাকি রাত ১২টার দিকে সবাইকে বাইরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল—এটি সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। এখন যে ছোট কম্পনগুলো হচ্ছে, সেগুলো মেইন শকের পর সাধারণত যেভাবে হয় ঠিক সেভাবেই হচ্ছে।
বাংলাদেশ কেন ঝুঁকিতে থাকে?
পরিচালক জানান, বাংলাদেশ তিনটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান করায় এখানে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে। প্লেটগুলো হলো—
ইউরেশিয়ান প্লেট
ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেট
বার্মা মাইক্রো-প্লেট
তিনি বলেন, বড় ভূমিকম্প সাধারণত ফল্ট লাইনের কাছে হয়। সাম্প্রতিক কম্পনগুলো সরাসরি প্লেট বাউন্ডারির না হলেও সাব-ফল্ট বা গৌণ ভাঙন থেকে হতে পারে।
জনগণের উদ্দেশে নির্দেশনা
বিএমডি জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে—
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ভূখণ্ড ইতিমধ্যেই শোষণ করেছে
তাই ৩ বা ৪ মাত্রার আফটার শক নিয়ে ভয়ের কোনও কারণ নেই
সাধারণত ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আফটার শক থেমে যায়
গুজব ছড়িয়ে বা বিশ্বাস করে আতঙ্ক না বাড়ানোই শ্রেয়
শেষে পরিচালক সবাইকে শুধুমাত্র বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসরণ করার পরামর্শ দেন।
মন্তব্য করুন
