

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকায় অবস্থান করছে। দেশের নিচ দিয়ে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান এবং বার্মা—এই তিনটি টেকটোনিক প্লেটের চলমান নড়াচড়ার ফলে বিভিন্ন সক্রিয় ফল্ট লাইন গঠিত হয়েছে।
এর মধ্যে ডাউকি, সিলেট এবং মধুপুর লাইনমেন্টকে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন ভূতাত্ত্বিকরা।
তাদের মতে, সবচেয়ে বড় সম্ভাব্য ঝুঁকির উৎস হলো মধুপুর ফল্ট, যেখানে প্রায় চারশো বছর ধরে ভূগর্ভে চাপ জমে আছে। যদি হঠাৎ এই চাপ মুক্তি পায়, তাহলে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮-এর কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকা এই ফল্ট থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় বিপদের মাত্রা আরও তীব্র। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মাত্র ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেই ঢাকার ৪০–৬৫ শতাংশ ভবন ধসে যেতে পারে।
২০০৭ সালে মধুপুর ফল্ট পর্যবেক্ষণের জন্য একটি সিসমোগ্রাফ স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে সেই যন্ত্রের অবস্থান অজানা—ফলে ওই অঞ্চলের ভূমিকম্পসংক্রান্ত নির্ভুল তথ্য জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গত শুক্রবার নরসিংদী কেন্দ্রিক ভূমিকম্পের পর মধুপুরসহ আশপাশের জনপদে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টাঙ্গাইলকে উচ্চঝুঁকির এলাকা ঘোষণা করা হলেও ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বা প্রস্তুতি সম্পর্কে তাদের আগেই অবহিত করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন জানান, ভবিষ্যৎ ক্ষতি কমাতে গণসচেতনতা এবং পরিকল্পিত নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া হবে। যথাযথ তদারকি থাকলে বড় দুর্যোগও অনেকটাই সামাল দেওয়া সম্ভব।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এমবিএসটিইউ) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে মধুপুর অঞ্চলে ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকি কমানোর সুযোগ রয়েছে। নতুন যন্ত্রপাতি কেনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মধুপুরের বোকারবাইদ এলাকায় এক ভূমিকম্পে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে বড় ফাটল তৈরি হয়েছিল, যার গভীরতা ছিল প্রায় ২৫ ফুট।
মন্তব্য করুন
