

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


পাবনা জেলা রেজিস্টার ও সাব-রেজিস্টারদের অফিসে হামলা, প্রাণনাশের হুমকি, মামলা প্রত্যারের আল্টিমেটাম, চাঁদাবাজি, অফিসে আতঙ্ক সৃষ্টি, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের লাঞ্চিতসহ নানা অভিযোগে আলোচিত নুরুল আলম শাহীনসহ পাবনা সদর সাব-রেজিস্টার অফিসের তালিকাভুক্ত ৬ জন দলিল লেখকের সনদ বাতিল করেছে পাবনা জেলা রেজিস্টার অফিস। এছাড়াও তাদেরকে সাব-রেজিস্টার অফিস আঙ্গিনায় প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা রেজিস্টার দ্বীপক কুমার সরকার। এর আগে রবিবার (২৩ নভেম্বর) দ্বীপক কুমার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাদের সনদ বাতিল ও অফিস আঙ্গিনায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত দলিল লেখকরা হলেন- পাবনা সদর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ইসহাক উল আলম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম শাহীন, আব্দুস সালাম, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, হাসান মাহমুদ পাপ্পু ও গোলজার হোসেন। নুরুল আলম শাহীন শ্রমিক লীগের নেতা, তিনি পাবনা সদর সাব-রেজিস্টার অফিসে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক সেবনসহ নানা অভিযোগে আলোচিত।
জেলা রেজিস্টার দ্বীপক কুমার সরকার জানান, সাবেক সদর সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী হত্যার হুমকি ও অশালীন আচরণসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিল, সেই অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। পরে সম্প্রতি সেই অভিযোগসহ দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়াও একাধিক সময়ে তাদের বিরুদ্ধে অফিসে হামলা, প্রাণনাশের হুমকি, মামলা প্রত্যারের আল্টিমেটাম, অফিসে আতঙ্ক সৃষ্টি, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের লাঞ্চিত, জোর পুর্বক চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদেরকে বিরুদ্ধে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই ৬ জন ছাড়াও যারা এইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, নুরুল আলম শাহীন আওয়ামী লীগের সময় নিজেকে শ্রমিক লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে পাবনা সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে আধিপত্য গড়ে তোলেন। জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতার ছত্রছায়ায় সেখানে চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে তোলেন। ৫ আগস্ট পরবর্তীতেও তিনি সেই স্বর্গরাজ্য ধরে রাখেন। এখন তিনি নিজেকে বিএনপিপন্থী পরিচয় দিয়ে কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় এই স্বর্গরাজ্য ধরে রেখেছেন। প্রতিদিন সেখানে ৪-৫শ দলিল প্রতি ৩-৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন। সেই হিসেবে প্রতিদিন ১০-১৫ লাখ টাকা, মাসে কয়েক কোটি টাকার চাঁদা উত্তোলন করে ভাগবাটোয়ারা করা হয়।
এবিষয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও নুরুল আলম শাহীনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পাবনা সদর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ইসহাক উল আলম বলেন, ‘আমরা শুধু চিঠি পেলাম যে আমাদের সনদ বাতিল করা হয়েছে কিন্তু কেন করা হয়েছে আমরা জানি না। আমাদের এর আগে কোনো নোটিশও দেয়নি। আমরা অফিস সুন্দরভাবে চালায় কোনো ধরনের ঝামেলা করি না। এখন মিথ্যা মামলা দিলে আমাদের কি বলার আছে?’
মন্তব্য করুন