বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৌদি প্রবাসীদের জন্য বড় সুখবর

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০২ পিএম
expand
সৌদি প্রবাসীদের জন্য বড় সুখবর

সৌদি আরবের শ্রমনীতি ইতিহাসে এক বড় পরিবর্তন এসেছে। প্রায় ৫০ বছর ধরে চালু থাকা কাফালা বা পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছে দেশটি।

এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বিদেশি শ্রমিক সরাসরি উপকৃত হবেন বলে জানা গেছে, যাদের অধিকাংশই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নাগরিক।

‘কাফালা’ ব্যবস্থার পরিবর্তে সৌদি সরকার এখন চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান মডেল চালু করেছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই কাঠামো বিদেশি শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তন, দেশত্যাগ ও ভিসা নবায়নের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিচ্ছে, যা আগে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করত নিয়োগকর্তারা।

এর ফলে অভিবাসী শ্রমিকরা এখন নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই চাকরি পরিবর্তন বা দেশ ত্যাগ করতে পারবেন। এছাড়া শ্রমিকদের জন্য আইনি সুরক্ষা এবং কর্মস্থলের অধিকার আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।

এই নীতি পরিবর্তন সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ উদ্যোগের অংশ, যার মূল লক্ষ্য অর্থনীতিকে আধুনিক করা, বিদেশি শ্রমবাজারকে কার্যকর করা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে ন্যায়সংগত পরিবেশ নিশ্চিত করা।

সরকারের দাবি, নতুন ব্যবস্থা দেশের শ্রমবাজারে দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং বিদেশি শ্রমিকদের অবদানকে আরও সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন সৌদি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে—এটি সৌদি শ্রম ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়, যা দীর্ঘদিন ধরে চলা শোষণমূলক কাঠামো থেকে শ্রমিকদের মুক্তি দেবে।

তবে তারা একই সঙ্গে সতর্ক করেছে, এই সংস্কারের বাস্তবায়ন ও তদারকি নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে পরিবর্তন শুধু কাগজে না থেকে বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হয়।

‘কাফালা’ শব্দটি আরবি ‘কাফিল’ (অর্থাৎ পৃষ্ঠপোষক) থেকে এসেছে।

১৯৫০-এর দশকে উপসাগরীয় দেশগুলোতে গড়ে ওঠা এই ব্যবস্থায় অভিবাসী শ্রমিকদের আইনি অবস্থান সম্পূর্ণভাবে তাদের নিয়োগকর্তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। ফলে তারা চাকরি পরিবর্তন, দেশত্যাগ বা আইনি সুরক্ষার ক্ষেত্রেও স্বাধীন ছিলেন না।

দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে সৌদি সরকার এই পুরনো ব্যবস্থা বাতিল করে আধুনিক শ্রমনীতি প্রবর্তন করেছে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন