মঙ্গলবার
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনার রাজনীতিতে ফেরা অসম্ভব: আইসিজি

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১১ এএম
আইসিজি’র লোগো
expand
আইসিজি’র লোগো

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভূমিকা প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।

বৈশ্বিক সংঘাত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণকারী এই সংস্থাটি সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিক্রিয়ায় এ মূল্যায়ন দেয়।

আইসিজির মতে, হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যতদিন থাকবেন, দলটির সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে তত বেশি সময় লাগবে।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅসন্তোষের ঢেউয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পতন ঘটায়। ওই দিনই শেখ হাসিনা ভারতে যান। পরে রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগসহ এর সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে।

দলটির নিবন্ধনও নির্বাচন কমিশন সাময়িকভাবে বাতিল করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জানান, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না।

হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সংস্থাটি জানায়, তারা বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

আইসিজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট থমাস কিন মনে করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের এই রায় বাংলাদেশে ব্যাপক সমর্থন পেতে পারে। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বিক্ষোভকারীদের ওপর যারা নির্মম দমন-পীড়ন চালানো হয়েছিল, তার দায় শেখ হাসিনার ওপর বর্তায়—এ বিষয়ে জনমনে বিশেষ দ্বিধা নেই।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের অনুসন্ধানে আগেই বলা হয়েছিল যে ওই দমন-পীড়নে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হন এবং তা ছিল রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনুমোদন ও নির্দেশনানুযায়ী পরিচালিত।

তদন্তে শেখ হাসিনা ও তার সহ-আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে সরাসরি দায়ী করা হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারেও নতুন প্রমাণ হাজির হয়েছে—যার মধ্যে ছিল শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও এবং সাবেক পুলিশপ্রধানের সাক্ষ্য।

তবে থমাস কিন স্বীকার করেন, বিচার নিজেই সমালোচনামুক্ত নয়। অনুপস্থিত আসামির বিচার এবং দ্রুত প্রক্রিয়ার কারণে ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

তাঁর মতে, এসব বিতর্ক বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার দীর্ঘদিনের সমস্যাকেই তুলে ধরে; অন্তর্বর্তী সরকারও এখনো এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার আনতে পারেনি।

তিনি বলেন, “বিচার নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এটি শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের অধীনে ঘটিত গুরুতর ঘটনাগুলোকে হালকা করে দেখার কারণ হতে পারে না।”

তার পর্যবেক্ষণ হলো, “এ রায়ের রাজনৈতিক অভিঘাত ব্যাপক। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন আপাতত অত্যন্ত দূরবর্তী। আর তিনি যদি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ছাড়তে না চান, তাহলে দলটির রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার পথও দীর্ঘ হবে।”

থমাস কিন আরও সতর্ক করেন যে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশে অস্থিরতা বাড়ছে। সাম্প্রতিক বোমা হামলা এবং আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। তার মতে, সহিংসতা থেকে দলটির সরে আসা উচিত এবং অন্তর্বর্তী সরকারেরও প্রয়োজন অতিরিক্ত কঠোর দমনমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন