

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, মোতালেব প্লাজাসহ আরও কয়েকটি মার্কেটের মোবাইল ব্যবসায়ীরা টেকনো-ইনফিনিক্স-আইটেল ব্রান্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
তাদের দাবি বাংলাদেশের মোবাইল মার্কেটে একচেটিয়া দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। তারা জানান, মার্কেটে যেন শুধুই টেকনো, ইনফিনিক্স এবং আইটেল ব্র্যান্ডের বাজার গড়ে উঠে এজন্য সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তাদের পণ্য অচল ও নিম্নমানের আর এসব সিন্ডিকেটের পেছনে প্রধান ইন্ধন দাতা এবং কাজ করছে এর মাদার কোম্পানি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে টেকনো-ইনফিনিক্স-আইটেল তিনটি ব্র্যান্ডই বাংলাদেশের বৈধ বিনিয়োগকারী, যারা দেশের প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিচ্ছে। মূলত অফিসিয়াল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধেই অবৈধ ও অনঅফিসিয়াল ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করছে। এবং আনঅফিশিয়াল মোবাইল ব্যবসায়ীরা ব্যক্তিগত স্বার্থে টেকনো, ইনফিনিক্স ও আইটেল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে বয়কটের আহ্বান জানাচ্ছে।
এমন কয়েকটি মোবাইল বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের পেজ থেকে আন্দোলনের ভিডিও আপলোড করতে দেখা গেছে। সেসব ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে বেশিরভাগই আন্দোলনকারীদের বিপক্ষেই নানান নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন সেসব পেজের অনুসারীরা।
এমএনএইচ রেদোয়ান নামের এক মন্তব্যকারী লিখেন, সহ্য হইতেছে না আর কি! তাদের আন অফিশিয়ালের বাটপারি ব্যবসা বন্ধ হইতেছে তাই তাদের আর ভালো লাগতেছে না।
তৌহিদুল ইসলাম মুক্তা লিখেন, এরা দেশে ইনভেস্ট করছে। ফ্যাক্টরি বানিয়েছে। আর আপনারা দেন টেক্স ফাঁকি আবার করেন অন্দোলন।
এছাড়া গ্রাহকদের অনেকে পক্ষে বিপক্ষে অসংখ্য মন্তব্য করতে দেয়া যায়।
আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রানশান হোল্ডিংস লিমিটেড (টেকনো) এর সিইও রেজোয়ানুল হক বলেন, এটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সরকার আনঅফিসিয়াল মোবাইল বন্ধের ব্যাপারে কাজ করছে এটা সরকারের কাজ। যেহেতু মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ সহসভাপতি হিসেবে আছি, সেখানে সিম্ফোনী, ভিভোসহ অন্যান্য ব্রান্ডের লোকজনও কমিটিতে আছে। কিন্তু যারা আনঅফিসিয়াল হ্যান্ডসেট বিক্রয় করে তারা আমাদের পেছনে লেগেছে। এটার সাথে আমার কোনো সম্পর্কই নেই।
এর আগে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, দেশের মোবাইল ফোন বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধভাবে আমদানি হওয়ায় বছরে সরকারের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।
এমআইওবির সহসভাপতি ও টেকনোর সিইও রেজোয়ানুল হক জানান, দেশে শতভাগ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অবৈধ আমদানির কারণে বাজারের চাহিদার মাত্র ৬০ শতাংশ উৎপাদন ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি নেতারা বলেন, ‘বিশ্বের শীর্ষ মোবাইল ব্র্যান্ডগুলোর প্রায় সবক’টিই এখন দেশে উৎপাদন করছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা দেশীয় কারখানা থেকেই মেটানো সম্ভব। কিন্তু অবৈধ মোবাইলের দাপটে স্থানীয় শিল্প পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না। অবৈধ বেচাকেনায় স্থানীয় নির্মাতাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের স্থানীয় উৎপাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আইন মেনে দেশে মোবাইল ব্যবসা করা এখন সহজ। এ খাতে নতুন বিনিয়োগ বাড়ছে, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। দেশে উৎপাদন বাড়লেও আইফোনের বাজার এখনো সম্পূর্ণভাবে অবৈধ আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা বৈধ বাজারের ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে।’
মূলত এই আলোচনার পর থেকেই অবৈধ ও আনঅফিসিয়াল মোবাইল বিক্রেতারা এই তিনটি অফিসিয়াল ব্রান্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন