মাছ খাওয়ায় বিড়াল হত্যা, আটক বুলবুলি বেগম 

বগুড়ার আদমদীঘিতে মাছ খাওয়ার জেরে একটি বিড়ালকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে বুলবুলি বেগম নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

অভিযুক্ত বুলবুলি বেগম (২৬) আদমদীঘি উপজেলার দত্তবাড়িয়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে গত বুধবার থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এমরান হোসেন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিড়ালটির গলা কেটে হত্যা করে ফেলে রাখার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই ক্ষোভ, ঘৃণা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

কয়েক দিন আগে একজন নারী একটি বিড়ালকে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে— এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার দত্তবাড়িয়া গুচ্ছগ্রামে বিড়ালের প্রতি এমন নিষ্ঠুরতার প্রতিবাদে সরব হয় বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় সংগঠনটি আদমদীঘি থানায় আইনি অভিযোগ দায়ের করে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (৭ নভেম্বর ২০২৫) বিড়াল হত্যায় অভিযুক্ত নারীকে আটক করে পুলিশ।

ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই অসংখ্য মানুষ অভিযুক্ত নারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তাদের মতে, এমন শাস্তি ভবিষ্যতে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণকারীদের এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করবে।

বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আদনান আজাদ বলেন, “আমরা প্রতিটি প্রাণীর প্রতি হওয়া নির্মমতার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি।”

বিড়াল হত্যার ঘটনাটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি গভীর মর্মবেদনা প্রকাশ করেন এবং উদ্বেগ জানান।

পরে তাঁর নির্দেশে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তিনি যে ন্যায়ভিত্তিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন— প্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সেই চেতনা ধারণ করে আমরা কাজ করছি। আমাদের দাবি, শুধু এই বিড়াল হত্যাকারী নয়, দেশের সব প্রাণী নির্যাতনের ঘটনারও যেন সুষ্ঠু বিচার হয় এবং আইনি প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়।

প্রাণীর প্রতি এমন নির্মম আচরণ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং প্রকৃতিকেও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে ফেলছে।”

বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সমন্বয়কারী, “আমরা বিএনপি পরিবার”-এর আহ্বায়ক এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য আতিকুর রহমান রুমন বলেন, “‘দেশ হোক সকল প্রাণের নিরাপদ আবাসস্থল’— এই চেতনা নিয়ে দেশের প্রতিটি মানুষকে প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। তবেই আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে পারব।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণকারীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, দেশের প্রচলিত আইনে প্রাণীর প্রতি নির্দয় আচরণ বা এতে সহায়তার দায়ে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে এ আইনের প্রয়োগ খুব একটা দেখা যায় না। এমনকি এ ধরনের মামলাও খুব বেশি হয় না। তবু আদমদীঘির এই নৃশংস ঘটনার পর অভিযুক্ত বুলবুলি বেগমকে অবশেষে আটক করেছে পুলিশ।