

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয়করণের দাবিতে চলমান আন্দোলন শেষ হয়নি—বরং এটি দীর্ঘমেয়াদি সংগ্রামের সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, ইনশা-আল্লাহ। অধ্যক্ষ আজিজীর এই বক্তব্য আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হলেও শিক্ষকদের দাবিতে অনড় অবস্থানের ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
টানা আট দিনের কর্মবিরতির পর আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দেশের সব বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরেছেন।
সরকার বাড়িভাড়া ভাতা আংশিকভাবে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মঙ্গলবার শিক্ষক নেতারা সভা শেষে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
গত ১২ অক্টোবর থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা তিনটি প্রধান দাবিতে আন্দোলনে ছিলেন— বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশে উন্নীত করা, উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা করা।
শিক্ষক নেতারা জানান, এসব দাবি নিয়ে তারা বহুবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করলেও দীর্ঘদিন কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি। ফলে তারা টানা কর্মবিরতি, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হন।
অবশেষে অর্থ মন্ত্রণালয় সীমিত আকারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিতে সম্মতি জানায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব মোস. শরিফুন্নেসা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়— বর্তমান বাজেট সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ধাপে ধাপে বৃদ্ধি করা হবে।
২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে মূল বেতনের ৭.৫ শতাংশ (সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা) হারে বাড়িভাড়া ভাতা কার্যকর হবে। ২০২৬ সালের ১ জুলাই থেকে আরও অতিরিক্ত ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ১৫ শতাংশ (সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা) ভাতা কার্যকর হবে।
শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে “আংশিক সাফল্য” হিসেবে দেখছেন। তবে অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী জানান, এটি কেবল একটি ধাপ—মূল লক্ষ্য হলো জাতীয়করণ।
তিনি বলেন, আমরা কেবল ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করিনি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য—এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণভাবে জাতীয়করণ করা। এই দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। শিক্ষক-কর্মচারী জোটের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন যে, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পেলে শিক্ষকরা আর্থিকভাবে স্থিতিশীল হবেন এবং শিক্ষা মানও উন্নত হবে।
তারা মনে করেন, জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য কমে যাবে এবং একই কাঠামোর আওতায় সব শিক্ষক সমান সুযোগ পাবেন।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ একটি বড় আর্থিক সিদ্ধান্ত। তাই এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যৌথ সমন্বয় প্রয়োজন।
একজন কর্মকর্তা বলেন, বাজেট ও প্রশাসনিক কাঠামো বিবেচনা করে ধীরে ধীরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
টানা আন্দোলনের পর আপাতত শ্রেণিকক্ষে ফিরলেও শিক্ষক সমাজের মূল দাবি—জাতীয়করণ—এখনও বহাল রয়েছে। অধ্যক্ষ আজিজীর ভাষায়, “এই সংগ্রাম থেমে নেই, বরং এটি একটি নতুন সূচনা।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    