

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমার ছড়া ইউনিয়নের পাহাড়ি জনপদে এখন স্থায়ী আতঙ্কের নাম ‘সন্ত্রাসী দৌরাত্ম্য’। গবাদি পশু লুট, রাতের পর রাত গুলির শব্দ, ডাকাতি- সব মিলিয়ে অশান্ত হয়ে উঠেছে এই জনপদের জীবন। অস্ত্রধারী ফেরারি আসামিদের ভয়ে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউনিয়নের গহীন অরণ্যে দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা দলবদ্ধভাবে পাহাড়ে বসবাস করে রাতের আঁধারে নেমে আসে নিচু বসতি এলাকায়- লুটপাট, ডাকাতি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে এই চক্র।
ফকিরজুম পাড়া, নোনাছড়ি ও আঁধারঘোনা- এই তিন পাহাড়ি এলাকাকে ঘাঁটি বানিয়েছে অস্ত্রধারীরা। স্থানীয়দের ভাষ্য, দিনে পাহাড়ে গরু-মহিষ চরাতে গেলেই জীবন হাতে নিয়ে যেতে হয়। অস্ত্র ঠেকিয়ে নিয়ে যায় গবাদিপশু, আর তা ফেরত আসে না।
পাহাড়ি শ্রমজীবী পরিবারগুলো জানায়, রাতে গুলির শব্দে শিশুরা আঁতকে জেগে ওঠে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাত নামলেই পাহাড়জুড়ে গুলির শব্দ। বাচ্চারা ঘুম থেকে কেঁদে ওঠে। ভয়ে কেউ বাইরে বের হয় না। দিনের বেলায়ও পাহাড়ে যাওয়া এখন মৃত্যুর ঝুঁকি।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে কালারমার ছড়া ইউনিয়নের সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিনুয়ারা সৈয়দের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তার বড় ছেলে সোহেল স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী নেতা। বাড়িতে ডাকাতি হওয়ার পর উপজেলা ও ইউনিয়ন জামায়াত নেতৃত্ব দ্রুত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্তে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
এর আগের দিন, বুধবার (২২ অক্টোবর) গভীর রাতে চিকনীপাড়া এলাকার এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ৭ ভরি স্বর্ণ ও ৩ লাখ টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা। গ্রামবাসী এক ডাকাতকে আটক করলে তার সহযোগীরা এসে গুলি ছুড়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, পান বরজ, ধান চাষ ও গবাদিপশুর ওপর নির্ভরশীল এই পাহাড়ি এলাকার মানুষ এখন দিশেহারা। রাত হলেই পাহাড়ি পথে নেমে আসে ভয়ের ছায়া। কেউ কেউ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।
স্থানীয়দের দাবি, শুধু পুলিশের অভিযানে নয়- কোস্টগার্ড ও যৌথ বাহিনীকে নিয়ে সমন্বিত চিরুনি অভিযান চালানো জরুরি। তা না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।
নুরুজ্জমান নামের এক চাষি বলেন, আমরা ভয়ে রাতের পর রাত পাহাড়ের দিকে তাকাতে পারি না। জানি না কোন মুহূর্তে গুলি শুরু হবে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত চিরুনি অভিযান চালানো।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল হক বলেন, পাহাড়ে অবস্থানরত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
