

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান উঠলেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় তীব্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ অভিযানে একদিনেই কমপক্ষে ৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি ক্রীড়াঙ্গনে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত পরিবারের ওপর আঘাতে ১২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও দুই শিশু রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার আল-আহলি স্টেডিয়াম দীর্ঘদিন ধরে বাস্তুচ্যুত মানুষের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল, আর সেখানেই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ঘটে।
গাজা সিটি থেকে পালিয়ে আসা নাজওয়া নামের এক নারী জানান, “হাতে যা ছিল তাই নিয়ে বেরিয়েছি। আর কিছুই বাকি নেই। প্রতিনিয়ত আতঙ্কে আছি। চলাফেরা করাটাই ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে, কোনো কিছু সঙ্গে আনারও সামর্থ্য নেই।”
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি সেনারা আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং হাজারো মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণে পালাতে বাধ্য করছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির দাবি করেছেন, নিরাপত্তার খাতিরেই ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ দিকে সরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তার ভাষায়, গাজার অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যেই শহর ছেড়েছে এবং সেনারা সেখানে অভিযান আরও জোরদার করবে।
কিন্তু জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন বলছে, ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলো কেবল সামরিক নয়—এটি গাজায় দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা এবং পশ্চিম তীরে ইহুদি জনসংখ্যার আধিপত্য নিশ্চিত করার কৌশলের অংশ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পরিসংখ্যান ভয়াবহ। এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৪১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গাজার যুদ্ধ নিয়ে তীব্র সমালোচনা ওঠে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “যারা শিশু হত্যা করছে, মানুষকে আতঙ্কিত করছে, তারা মানবতার মর্যাদার যোগ্য নয়।”
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গাজার মানুষের পাশে আমরা আছি। এই যুদ্ধ আর চলতে দেওয়া যায় না।”
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ আইদে জানান, শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য নীরব আলোচনায় ইতিমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তার মতে, জুলাইয়ে ১৪২টি দেশ যে ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’কে সমর্থন দিয়েছিল, সেই উদ্যোগই আলোচনার ভিত্তি হয়ে উঠেছে।
মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন “আশান্বিত, এমনকি আত্মবিশ্বাসী” যে শিগগিরই শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন অগ্রগতির ঘোষণা আসবে। তার দাবি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা বিশ্বনেতাদের হাতে ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
