বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়ার তেল কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৮ এএম
রাশিয়ার জ্বালানি তেল উত্তোলনের দৃশ্য
expand
রাশিয়ার জ্বালানি তেল উত্তোলনের দৃশ্য

রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে লক্ষ্য করে রসনেফট (Rosneft) ও লুকঅয়েল (Lukoil)—এই দুই বৃহৎ রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) এক সরকারি বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট।

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো ক্রেমলিনের প্রধান অর্থনৈতিক উৎসকে চাপে আনা। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই—এখনই সময় যুদ্ধ থামানোর।

অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট জানান, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে আন্তরিকতা না দেখানোয় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের পশ্চিমা মিত্ররাও একইভাবে এগিয়ে আসুক, যেন মস্কোর যুদ্ধ তহবিলের প্রবাহ বন্ধ করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের এক কর্মকর্তা জানান, নিষেধাজ্ঞার আওতায় এই দুই কোম্পানির আন্তর্জাতিক লেনদেন, সম্পদ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ কার্যক্রমে কড়া সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেন।

এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমি বিশ্বাস করি, পুতিন এবং জেলেনস্কি—উভয়েই শান্তি চান। এখনই সময় যুদ্ধের অবসান ঘটানোর।

রুশ ও ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের অন্তত ৪৩ হাজার সেনা নিহত এবং প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি আরও ব্যাপক—প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার নিহত এবং মোট হতাহত ও নিখোঁজের সংখ্যা এক মিলিয়নের বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ মূলত রাশিয়ার তেল রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে পরিকল্পিত। এতে রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি, বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। মস্কোর নীতিনির্ধারকরা ধারণা করছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর এই চাপ রাশিয়ার অর্থনীতি দুর্বল করতে পারবে না, বরং দেশটি এশীয় বাজারের মাধ্যমে বিকল্প রপ্তানি পথ খুঁজে নেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা শুধু রাশিয়ার জ্বালানি খাতকেই নয়, বরং ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এখন প্রশ্ন হলো—এই অর্থনৈতিক চাপ কি মস্কোকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে পারবে, নাকি রাশিয়া আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন