রবিবার
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পশ্চিম তীরকে ইসরাইলে যুক্তকরণ বিলের প্রাথমিক অনুমোদন

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪১ এএম আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
expand
পশ্চিম তীরকে ইসরাইলে যুক্তকরণ বিলের প্রাথমিক অনুমোদন

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যে আনা একটি বিতর্কিত বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলি সংসদ নেসেট।

এই বিলটি চূড়ান্তভাবে পাস হলে পশ্চিম তীর কার্যত ইসরাইলের সার্বভৌম ভূখণ্ডে পরিণত হবে।

তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন, যা রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। খবর: আল জাজিরা।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোটে ১২০ আসনের নেসেটে ২৫ জন পক্ষে ও ২৪ জন বিপক্ষে ভোট দেন। অল্প ব্যবধানে প্রাথমিকভাবে পাস হওয়া এই বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর হতে আরও তিন ধাপের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

নেসেটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব পশ্চিম তীরের জুদিয়া ও সামারিয়া অঞ্চলে প্রয়োগ করাই এই আইনের মূল উদ্দেশ্য।

বিলটি এখন সংসদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পাঠানো হয়েছে, যেখানে এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মার্কিন অবস্থান এই ভোটের মাত্র এক মাস আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইসরাইল পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার অনুমতি পাবে না।

তবে সেই অবস্থান উপেক্ষা করে নেসেটের এ পদক্ষেপে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেলআবিবের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টি এক বিবৃতিতে জানায়, এই ভোট বিরোধী দলের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, যা ইসরাইলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

দলটি আরও বলে, সার্বভৌমত্ব কেবল আইনের কাগজে নয়, বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়।

বিলটি পাসের পর ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হামাস, কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডান একযোগে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ইসরাইলি নেসেটের এই সংযুক্তিকরণ প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা একক ভূখণ্ড—এর ওপর ইসরাইলের কোনো সার্বভৌম অধিকার নেই।

হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বিল ইসরাইলের উপনিবেশবাদী মনোভাব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। পশ্চিম তীর দখলের এই প্রচেষ্টা অবৈধ, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বড় বাধা।

সংগঠনটি আরও বলে, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মৌলিক অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিলের প্রাথমিক অনুমোদন ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ডানপন্থী চাপের প্রতিফলন। যদিও নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছেন, তবু জোটের কয়েকজন মন্ত্রী ও বিরোধী দলের সদস্যদের সমর্থনে বিষয়টি নতুন রাজনৈতিক জটিলতার জন্ম দিতে পারে।

চূড়ান্তভাবে বিলটি পাস হলে পশ্চিম তীরের ভবিষ্যৎ এবং ফিলিস্তিন-ইসরাইল সম্পর্কের ওপর তার প্রভাব হবে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী—যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X