শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বায়ুর বেগ বা প্রস্রাব চেপে রেখে নামাজ হবে কিনা জেনে নিন

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
বায়ুর বেগ বা প্রস্রাব চেপে রেখে নামাজ হবে কিনা জেনে নিন
expand
বায়ুর বেগ বা প্রস্রাব চেপে রেখে নামাজ হবে কিনা জেনে নিন

আল্লাহতায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁর ইবাদতের জন্য, আর ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নামাজ। নামাজ কেবল ব্যক্তিগত আধ্যাত্মিকতার মাধ্যম নয়, এটি সামাজিক ও নৈতিক জীবনেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, নামাজ হলো দ্বীনের মূল স্তম্ভ। অর্থাৎ, নামাজ ছাড়া ধর্মের ভিত্তি দৃঢ়ভাবে গড়ে ওঠে না।

রাসুল (সা.) আরও নির্দেশ দিয়েছেন

আমার চোখের প্রশান্তি রয়েছে নামাজে। এটি বোঝায় যে নামাজ কেবল আইনগত নির্দেশ নয়, বরং একজন মুমিনের জন্য আত্মিক প্রশান্তির উৎস।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন

তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম করো এবং ফজরের নামাজও ঠিকঠাক রাখো। নিশ্চয়ই ফজরের নামাজে সমৃদ্ধি আছে। (সুরা বনি ইসরাঈল: ৭৮)

অন্য স্থানে বলা হয়েছে

নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। (সুরা আনকাবুত: ৪৫) অর্থাৎ, প্রকৃত নামাজি ব্যক্তি সব ধরনের অশ্লীলতা ও অনৈতিক আচরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।

নামাজের মর্যাদা সবচেয়ে বড়, এবং নিয়মিত নামাজ পড়া ব্যক্তির মর্যাদাও স্বাভাবিকভাবেই বেশি। তবে অনেক মানুষ কখনও কখনও প্রস্রাব বা পায়খানার চাপ বা বায়ুর চাপ থাকলেও নামাজ শুরু করে দেন। এতে প্রশ্ন আসে-শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি ঠিক কি না।

হাদিসে নবীজি (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন যে, প্রস্রাব বা পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ করা উচিত নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম (র.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন নামাজে দাঁড়াবে এবং কারও প্রস্রাব বা পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেবে, সে আগে সেটি সেরে নামাজে বসুক। (তিরমিজি: ১৪২) হজরত সাওবান (র.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, “প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে কেউ নামাজ পড়বে না।” (তিরমিজি: ৩৫৭)

একটি হাদিসে হজরত নাফে (র.) বলেছেন, যদি কেউ পেটে বায়ুর চাপ অনুভব করে, সে অবস্থায় নামাজ পড়বে না।” (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৮০২২)

এই নির্দেশনার ভিত্তিতে ইসলামী আইনজ্ঞ ও ফিকাহ বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রস্রাব, পায়খানা বা বায়ুর চাপ থাকা অবস্থায় নামাজ পড়া মাকরুহ (নিষ্ঠুরভাবে নিষিদ্ধ নয়, তবে অনুচিত)। নামাজের ভেতরে এমন চাপ অনুভূত হলে নামাজ ছেড়ে পূর্ণভাবে ওয়াজিব অজু ও ইস্তিঞ্জা সেরে নামাজ করা উচিত, যাতে মন ও দেহের স্থিরতা বজায় থাকে।

তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেমন নামাজের সময় খুবই সীমিত বা নামাজ কাজা হওয়ার আশঙ্কা থাকলে, তখন নামাজই প্রথমে পড়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে নামাজ পড়ে নেওয়া মাকরুহ হলেও নামাজ বৈধ হবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/৩৪১-৬৪৪)

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন