

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা শাখা। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামীণ অঞ্চল পর্যন্ত দলটির নারী নেত্রী ও কর্মীরা ঘরে ঘরে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন, সভা-সমাবেশ করছেন এবং নানা উপায়ে ভোটারদের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
আর জামায়াতের এই তৎপরতায় হতাশ বিএনপি নেতারা। বিএনপি নেতাদের দাবি জামায়াতের মহিলা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে জামায়াতের মহিলা শাখার কর্মীদের মোকাবিলায় বিএনপি মাঠে নেমেছে।
অনেক স্থানে পর্দা মেনে নারীরা গ্রুপভিত্তিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লার পক্ষে সমর্থন চাইছেন।
ধর্মীয় আলোচনা, তালিম ও দাওয়াতি কার্যক্রমের মধ্যেই রাজনৈতিক বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে প্রচলিত কথায় তারা বলছেন, ইসলামের পক্ষে ভোট মানে পরকালের মুক্তির আশাও বয়ে আনবে।
বিভিন্ন জেলার মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত জামায়াতের মহিলা শাখার সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। এসব ইউনিটের কর্মীরা নিয়মিত সভা, দাওয়াতি কার্যক্রম ও নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
ঢাকার মিরপুরের পল্লবী এলাকায় দেখা যায়, নারী রুকনদের নেতৃত্বে কয়েকটি গ্রুপ ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, পরিচিত একজনের মাধ্যমে কয়েকজন নারী নেত্রী বাড়িতে এসে ধর্মীয় আলাপের পাশাপাশি দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলাতেও একই চিত্র। উপজেলা থেকে শুরু করে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মহিলা শাখার সক্রিয় কমিটি রয়েছে।
উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জানান, মহিলা শাখার সভা-সমাবেশগুলো পর্দা মেনে অনুষ্ঠিত হয়, এবং সব কার্যক্রম নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে।
ময়মনসিংহ-১০ আসনে মনোনীত জামায়াত প্রার্থীর প্রচারণায়ও নারী নেত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
গ্রামের মহিলাদের নিয়ে ধর্মীয় তালিমের আয়োজন করা হয়, যেখানে পাশাপাশি রাজনৈতিক বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
গফরগাঁও উপজেলার পাইথল ইউনিয়নে নারী সভানেত্রী আফরোজা খাতুনের নেতৃত্বে সমাবেশে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে ভোট আহ্বান করা হয়।
মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে জানা গেছে, জামায়াতের মহিলা কর্মীরা সরাসরি ভোটারদের বাড়িতে যাচ্ছেন, এমনকি বাইরে থাকা নারী ভোটারদের সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করছেন।
জেলা মহিলা জামায়াত কর্মী নাদিয়া শারমিন বলেন, “আমরা মানুষকে নামাজ ও ইসলাম পালনে উৎসাহ দিচ্ছি। ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতকে ভোট দিতে বলছি।”
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল হক পাটোয়ারী বলেন, “মহিলা শাখার কার্যক্রম ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। তারা নারী ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং আগামী নির্বাচনের আগে আরও গতি পাবে এই কাজ।”
কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায়ও ব্যাপক সক্রিয়তা দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়ায় দুই হাজারের বেশি এবং মুরাদনগরে প্রায় বারো শত নারী কর্মী মাঠে কাজ করছেন।
কুমিল্লা-৩ আসনে জামায়াত প্রার্থী ইউসুফ হাকিম সোহেল বলেন, “আমাদের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী—তাদের সম্পৃক্ত না করলে দাওয়াতি ও রাজনৈতিক কাজ সফল হয় না। মহিলা বিভাগ ও ছাত্রী সংগঠন এই লক্ষ্যেই কাজ করছে।”
জামায়াতের মহিলা শাখার বিদেশ বিভাগীয় সেক্রেটারি প্রফেসর খন্দকার আয়েশা খাতুন জানান, “দেশজুড়ে আমাদের সংগঠন কাঠামো বিস্তৃত। জোনভিত্তিক দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে লাখো নারী সদস্য বর্তমানে দাওয়াতি ও নির্বাচনী তৎপরতায় যুক্ত আছেন।”
মন্তব্য করুন
