

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির বিস্তার যেমন নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে, তেমনি অপব্যবহারের ঝুঁকিও বাড়ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।
বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীরা মনে করছেন, নীতিমালা ও আইনি কাঠামোর অভাবে এআই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
গত বছর দেশের বন্যার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক শিশুর কষ্টের সাদা-কালো ছবি ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
পরে জানা যায়, ছবিটি আসল নয়, বরং এআই দিয়ে তৈরি। মানবিক আবেগকে স্পর্শ করা এমন ভুয়া ছবি মানুষকে যেমন নাড়া দিয়েছে, তেমনি প্রযুক্তির অপব্যবহার কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা নতুন করে ভাবিয়েছে।
বিশ্বের বহু দেশ ইতোমধ্যেই এআই ব্যবহারের জন্য স্পষ্ট আইন, নীতিমালা ও নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও কোনো পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা, স্ট্র্যাটেজি বা আইন কার্যকর হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, জাতীয় এআই নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে। “ন্যাশনাল এআই পলিসি তৈরিতে একটি টিম কাজ করছে। এই পলিসির মাধ্যমে সব প্রাসঙ্গিক বিষয় একসঙ্গে সমাধান করার পরিকল্পনা আছে,” বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বিএম মইনুল হোসেনের মতে, জেনারেটিভ এআইয়ের কারণে কণ্ঠ ও চেহারা নকলের মতো জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে, যা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্যই উদ্বেগের কারণ। তিনি বলেন, “এআই শুধু সুযোগ নয়, এটি ভুল তথ্য, প্রোপাগান্ডা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর হাতিয়ারও হয়ে উঠেছে।”
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু মনে করেন, প্রযুক্তির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার জন্য স্পষ্ট আইন থাকা জরুরি। “এআই যত ছড়াবে, ততই তার লাগাম কোথায় টানতে হবে সেটি জানা প্রয়োজন,” বলেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু নীতি নয়—সাথে ডেটা সুরক্ষা, উদ্ভাবন সূচক এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের সীমা নির্ধারণ করাও জরুরি। অন্যদিকে, ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেডের চিফ ইনফরমেশন অফিসার সুমন আহমেদ সাবির মনে করেন, বিদ্যমান আইনের মাধ্যমেই প্রযুক্তি-সম্পর্কিত অপরাধের বিচার সম্ভব, তবে এআই ব্যবহারের ক্ষেত্র ও সীমা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জাতীয় এআই কৌশল প্রণয়ন করেছিল, যেখানে বিভিন্ন খাতে এআই ব্যবহারের রূপরেখা ছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তীতে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি হলেও সেটিও এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, ভারত, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এআই-সংক্রান্ত স্পষ্ট আইন ও কৌশল চালু করেছে, বাংলাদেশ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
ইউনেস্কো-স্বীকৃত নৈতিক এআই কাঠামোয় যুক্ত হওয়া, বিশেষজ্ঞ তৈরির উদ্যোগ, নীতি বাস্তবায়ন ও শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এআই যুগে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    