

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে অবৈধ দোকান, উদ্বাস্তু ও ভবঘুরেদের উচ্ছেদ করা নিয়ে ডাকসু ও বামপন্থীদের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত চার দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর যৌথ উদ্যোগে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। তবে এই অভিযানকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কয়েকটি বামসংগঠন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় টিএসসি মেট্রোরেল স্টেশন এলাকা থেকে শুরু করে চারুকলা অনুষদ পর্যন্ত এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চলে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘গ্রীন ফিউচার’-এর সদস্যরা অংশ নেন।
অভিযান চলাকালে গাঁজা ও ড্যান্ডিসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি যুবায়ের। তিনি বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ ঘটে। এর মধ্যে অনেকে মেট্রোর নিচে বা আশপাশের এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তাদের একটি অংশ মাদক সেবন ও বিক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত, আর রাত হলে ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, এই ভবঘুরেদের আশ্রয়কে কেন্দ্র করেই মাদক কারবারি ও অপরাধচক্রগুলো সক্রিয় থাকে। তাই আমরা ডাকসুর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, শাহবাগ থানা পুলিশ ও মেট্রোরেল পুলিশের সহযোগিতায় এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি।
অভিযানের সময় একজনের কাছ থেকে গাঁজা এবং আরেকজনের কাছ থেকে ড্যান্ডি উদ্ধার করা হয় বলে জানান এবি যুবায়ের। তিনি বলেন, এটি ছিল ডাকসুর পক্ষ থেকে একটি প্রাথমিক অভিযান। ভবিষ্যতে আমরা স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে চাই, যেন ক্যাম্পাসে নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় থাকে।
তবে এই উচ্ছেদ অভিযানকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে উদ্ভাস্তু, হকারদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কয়েকটি বাম ছাত্র সংগঠন। এসময় বিক্ষোভ-মিছিলে বাঁধা দিলে আহত হয় প্রক্টরিয়াল টিমের কয়েকজন সদস্য।
মিছিলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রিয়াদ ও ইসরাত জাহান ইমু , বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের ঢাকা নগর শাখর আহ্বায়ক নাইম উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানুষ হতে শেখায়। অথচ আজ উচ্ছেদের অভিযানের নামে যা করা হলো তা ঠিক না। যেসব উদ্বাস্তু বা হকাররা ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন আছে, তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্হা না করে এমন উচ্ছেদ অভিযান ভালো কিছু আনবে না।
তবে, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদের। তিনি এ সংক্রান্ত এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ক্যাম্পাসের স্টেকহোল্ডার হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর বাইরে কোনো মাদক ব্যবসায়ী, অনিবন্ধিত দোকানদার কিংবা হকারদের কোনো ইস্যুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। বহিরাগত উচ্ছেদে যাদের পুরনো মাদক ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের সিন্ডিকেট ভেঙে যাচ্ছে, তারা আজ নতুন বয়ান হাজির করার চেষ্টা করল এবং মিছিলেরও আয়োজন করল।
তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, কথা একটাই হয় ডাকসু থাকবে, নতুবা অবৈধ ব্যবসা-মাদক সিন্ডিকেট থাকবে; দুটো একসাথে চলতে দেবো না।
মন্তব্য করুন