

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কৃষিপ্রধান জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে গত মৌসুমে ব্যাপক পরিমাণে আলু উৎপাদন হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তা হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন। কিন্তু হিমাগারের চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ হলেও অধিক দামের আশায় এখনও বেশিরভাগ আলু বের করেননি তারা। দীর্ঘদিন সংরক্ষণের কারণে অনেক আলুতে পচন ধরেছে। ফলে শ্রমিক দিয়ে হিমাগারের চত্বরে পচা আলু বাছাই করতে হচ্ছে।
এতে হিমাগার খরচ ও শ্রমিক খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি আলুর খরচ পড়ছে ১৮ থেকে ১৯ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১২ থেকে ১৫ টাকায়। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে সংরক্ষিত আলু নভেম্বরের মাঝামাঝি বের করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ আলু হিমাগার থেকে বের করা হয়েছে। এতে হাজার হাজার মেট্রিক টন আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
একজন কৃষক বলেন, “এবার আমাদের এলাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু শুরুতে দাম না থাকায় বিক্রি করতে পারিনি। তখনও অনেক আলু নষ্ট হয়ে গেছে। পরে ভালো দামের আশায় হিমাগারে রেখেছি, কিন্তু তাতেও বিপাকে পড়েছি। এখন আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচের অর্ধেকও তুলতে পারছি না। সরকার যদি আলুগুলো কিনে নেয়, তাহলে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।”
এক ব্যবসায়ী জানান, “যে দামে আলু কিনে সংরক্ষণ করেছি, এখন তার দ্বিগুণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। বাজারে আলুর দাম ১২ থেকে ১৫ টাকা, কিন্তু আমাদের খরচ পড়েছে প্রতি কেজিতে ১৮ থেকে ২০ টাকা। তাই হিমাগার থেকে আলু বের করাও সম্ভব হচ্ছে না। সরকার যদি সহায়তা করে এবং সরকারি উদ্যোগে আলু ক্রয় করে, তাহলে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে, না হলে আরও আলু পচে যাবে।”
ঠাকুরগাঁও শাহী হিমাগারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “অন্যান্য বছরে এই সময়ের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আলু ডেলিভারি হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর মাত্র ৩০ শতাংশ আলু বের হয়েছে। কারণ, মজুত বেশি এবং বাজারদর কম। এভাবে চলতে থাকলে কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিক—সবাই বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন।”
ঠাকুরগাঁও হিমাদ্রী হিমাগারের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. এনামুল হক বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির সমাধান দিতে পারবে একমাত্র সরকারই। আমাদের গ্রাহকদের সঙ্গে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। এরপর আর আলু রাখা সম্ভব হবে না, তাই সবাইকে ধীরে ধীরে আলু সরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি।”
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে গত মৌসুমে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। জেলার ১৬টি হিমাগারের মোট সংরক্ষণক্ষমতা ১ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন। ফলে প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
