

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর তীরে ক্রসবার-৩ ও ৪–এর মধ্যবর্তী এলাকায় ৬৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করছে।
পরিকল্পনায় থাকা ২৫ কোটি টাকার ব্রিজটি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, ব্রিজ হবে শুনেছিলাম, সেই ব্রিজ গেল কোথায়?
নির্ধারিত সময়ে ব্রিজ না হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, ফলে ক্রসবার-৩ ও ৪-এর মাঝের এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পাউবো জানিয়েছে, ভোগান্তি কমাতে তারা নতুন একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের অনুমোদনের জন্য ঢাকায় প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় ছিল ৩ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষা, ৩ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ, নদী থেকে ড্রেজিংকৃত ১ কোটি ৮২ লাখ ঘনমিটার বালু দিয়ে ভরাট কাজ, উদ্ধারকৃত জমি উন্নয়ন এবং ৮৪ মিটার দীর্ঘ ২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকার আর্চ ব্রিজ নির্মাণ। এছাড়া সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বরাদ্দ ছিল আরও ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাঁধ ও বালু ভরাটের কাজ শেষ হলেও ২৫ কোটি টাকার আর্চ ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। সৌন্দর্যবর্ধনের বেশ কিছু কাজও এখনও বাকি রয়েছে।
ক্রসবার-৩ এলাকার হাবিবুর রহমান জানান, “ইপিজেড হলে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে। ক্রসবার-৩ ও ৪–এর মাঝখানে ৩ থেকে ৪ হাজার পরিবার থাকে। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনানেয়া ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে করা খুব কষ্টকর হয়ে যাবে। দুই ক্রসবার ও যমুনা সেতু সংযোগকারী ব্রিজটি এখন সময়ের দাবি।”
পাউবোর প্রকল্প তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ৫৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। পরে কয়েক দফায় ব্যয় বাড়িয়ে ৬৩৮ কোটিতে উন্নীত করা হয় এবং ২০২৩ সালে কাজ শেষ করে পাউবো। পুরো প্রকল্পটি সরকারের জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, “ব্রিজের কাজ ডিপিপিতে থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। কেন হয়নি, সে বিষয়ে আমি অবগত নই, কারণ তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না।” তিনি আরও জানান, “ক্রসবার-৪ শিল্পপার্ক কর্তৃপক্ষ দখল করে বাউন্ডারি নির্মাণ করেছে, এতে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। এরপরও ভোগান্তি কমাতে আমরা নতুন একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব পাঠিয়েছি।”
তিনি বলেন, “আমরা যমুনা নদী থেকে উদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং বাঁধ নির্মাণের কাজ করেছি। প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। কাজ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিছুদিন আগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদও করা হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধনের কিছু টাইলসের কাজ এখনো বাকি আছে।”
এর আগে, গত সোমবার (৩০ জুন) জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিদ্ধান্ত হয়—সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন থাকলেও এখানে ইপিজেড স্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় এবং পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়া চলছে। এরপর ঢাকাস্থ ইপিজেড কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেন এবং সিরাজগঞ্জে ইপিজেড হলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যাবে বলে ইতিবাচক মত দেন।
মন্তব্য করুন