শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই হাত ছোট, তবু থামেনি স্বপ্ন, পা দিয়ে লিখে আলো ছড়াচ্ছে সাথী 

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২১ পিএম
পা দিয়ে লিখে আলো ছড়াচ্ছে সাথী 
expand
পা দিয়ে লিখে আলো ছড়াচ্ছে সাথী 

জন্ম থেকেই দুই হাত ছোট,তবু থেমে নেই সাথী। দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি আর অদম্য সাহসে গলাচিপার ছোট শিবা গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির এই ছাত্রী আজ সবার অনুপ্রেরণা। অন্যরা যেখানে হাত দিয়ে লেখে, সাথী লেখে পা দিয়ে।

শিবার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী সাথী প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত হয়। সহপাঠীদের সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে, খাতায় পা দিয়ে লিখে যায় সুন্দর অক্ষরে। তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনোই তাকে হার মানাতে পারেনি বরং তা হয়ে উঠেছে তার লড়াইয়ের প্রেরণা।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিম এনপিবিকে জানায়,সাথী আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। তার হাত ছোট, কিন্তু মন অনেক বড়। পা দিয়ে সে যে মনোযোগ দিয়ে লেখে, তা দেখে আমরা মুগ্ধ। শিক্ষক হিসেবে আমরা তার পাশে আছি।

সাথী বলেন, স্কুলের সবাই আমাকে ভালোবাসে, আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই। ডাক্তার হয়ে গ্রামের অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করবো।

সাথীর পিতা মো. সাফায়েত একজন প্রান্তিক কৃষক, আর মা তাসলিমা গৃহিণী । তারা বলেন, সাথীর প্রতিবন্ধকতা তার পথে বাধা নয়। বরং এটি তার স্বপ্ন পূরণের সাহস যোগায়। বর্তমানে সে প্রতিবন্ধী ভাতা পায়, যা কিছুটা সহায়তা হিসেবে কাজ করে। তবে সরকার থেকে যদি আরো কিছু সাহায়্য সহোযোগিতা করতো তাহলে আমার মেয়েটা ভালো থাকতে পারতো।

গলাচিপা সমাজসেবা অফিসার মু. অলিউল ইসলাম বলেন,সমাজসেবা অধিদফতর প্রতিবন্ধী শিশুদের পাশে সবসময় থাকে। সাথীর মতো মেধাবী ও সাহসী শিশুর পাশে আমরা সব সময় থাকব।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সাথী ক্লাসে অত্যন্ত মনোযোগী ও আত্মনির্ভর। পা দিয়ে লেখা সত্ত্বেও তার লেখা পরিপাটি ও স্পষ্ট। সহপাঠীরাও তাকে সাহায্য করে, তবে সাথী চেষ্টা করে নিজের কাজ নিজেই করতে।

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন,সাথীর গল্প সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তার শিক্ষাজীবনে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। এমন শিশুদের কারণেই সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন