

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী, চরকাচিয়া ও কানিবগা ব্লকে দায়িত্বে থাকা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা (এসএএও) আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য গোপন করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে ম্যানেজের মাধ্যমে তিনি সরকারি ভর্তুকিতে পাওয়া দু’টি হারভেস্টার মেশিন এবং তৃণমূল পর্যায়ের ডিজিটাল কৃষক সেবা সেন্টারের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিতরণ করা প্রায় ২০টি হারভেস্টার মেশিনের ক্ষেত্রেও একইভাবে উপসহকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কোটি টাকারও বেশি সরকারি ভর্তুকি লোপাট হয়েছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, আখতার হোসেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হওয়ায় এবং লক্ষ্মীপুরে ছাত্র হত্যার মামলার আসামি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার আলতাফ হোসেনের ছত্রছায়ায় থেকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। তাঁর কর্মস্থল দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন হলেও তিনি বেশিরভাগ সময় ২নং চরবংশী এলাকায় অবস্থান করেন।
আরও কয়েকজন কৃষক বলেন, স্বজনপ্রীতি করে আখতার হোসেন তাঁর ভাগিনা ইব্রাহীম গাজী (পিতা: আ. খালেক গাজী) ও জহিরুল ইসলাম (পিতা: আ. খালেক) নামে দু’টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন নিয়েছেন। ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর যথাক্রমে 15424A / C60B500449 এবং 16962A / C60B500982। সরকারের পক্ষ থেকে এই দু’টি মেশিনে প্রায় ৩২ লাখ টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়। স্থানীয় কৃষকদের সুবিধার্থে দেওয়া হলেও ওই মেশিন দুটি অন্য এলাকায় নিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালনা করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রণোদনা ও অন্যান্য সরকারি সুবিধার বেশিরভাগই আখতার হোসেন নিজের স্বজনদের নামে বণ্টন করেন এবং প্রকৃত কৃষকেরা বঞ্চিত হন।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার তৃণমূল পর্যায়ে কৃষক সেবা ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের জন্য ৫ লাখ টাকা প্রণোদনা বরাদ্দ দেয়।
কিন্তু উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আখতার হোসেন সেই সেন্টারটি তাঁর ছোট ভাই আবুল হোসেনের নামে চালু করেন এবং নিজেই সেখানে সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন, সরকারি দায়িত্ব ফাঁকি দিয়ে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা বলেন, সেই ডিজিটাল সেন্টারের কোনো খবরই আমরা জানি না। শুধুমাত্র তাঁর স্বজনরাই সেবাটি পেয়ে থাকে।
২নং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেন, আমি ২নং এলাকার দায়িত্বে থাকলেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্যার আমাকে না জানিয়ে আখতার হোসেনের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁর ছোট ভাই আবুল হোসেনকে ডিজিটাল সেন্টারের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি বারবার আপত্তি জানিয়েছি, কিন্তু স্যার আমার কথা শোনেননি।
এ বিষয়ে রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলাম প্রথমে কোন ধরনের তথ্য দিতে চাননি, তথ্য প্রাপ্তির আবেদনপত্রে আবেদন করেও সঠিক কোন তথ্য না দিয়ে তিনি বলেন, এসব তথ্য দিয়ে কী করবেন? আপনাদের কোন সুবিধা প্রয়োজন হলে সেটা বলবেন, পরবর্তী কোন হারভেস্টার মেশিন বরাদ্দ আসলে আপনারা চাইলে আপনাদের দিবো এগুলো নিয়ে আর ঘাটাঘাটি কইরেন না, পাস্ট-ইজ পাস্ট বাদ দিন না এসব, আমি সবসময় বিজি থাকি, এসব নিয়ে আমাকে আর জ্বালাইয়েন না।
এছাড়াও তিনি বলেন, আপনারা নিউজ করেন, প্রাথমিকভাবে কিছু অনিয়মের তথ্য পাওয়ায় শাস্তি হিসেবে আমি অভিযুক্তদেরকে ইউনিয়ন বদল করে বদলি করেছি। এতে কী শাস্তি হয়নি? অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
