

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


গাজীপুরে একটি রিসোর্টের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, নিয়মিত চাঁদা না দেওয়ায় রিসোর্টটির প্রবেশপথে ইচ্ছাকৃতভাবে বালু ফেলে সেটি কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মহানগরের টেক কাথোরা এলাকায় অবস্থিত ‘রিভেরি রিসোর্ট’-এ। গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) রিসোর্টের প্রধান ফটকের সামনে একটি ট্রাক ভর্তি বালু ফেলে দেওয়া হয়। শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেই বালু এখনও সেখানে স্তূপ করে রাখা আছে, যার ফলে কার্যত রিসোর্টের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
অভিযোগের কেন্দ্রে আছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রাসেল রানা, যিনি স্থানীয়ভাবে আবদুল ওয়াদুদ মোক্তারের ছেলে হিসেবে পরিচিত।
রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, গত এক বছর ধরে রাসেল রানা নানা কৌশলে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে আসছিলেন। উন্নয়ন কাজগুলোতে তাকে দ্বিগুণ দর প্রদান করতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এক পর্যায়ে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার মধ্যস্থতায় সমাধানের চেষ্টা হয়, তবে তা স্থায়ী হয়নি।
রিসোর্টের চেয়ারম্যান এহছানুল কাদীর বলেন, “৪ অক্টোবর রাসেল রানা ফোন করে জানায়, গত দুই মাসের বকেয়া হিসেবে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। না দিলে লোকজন নিয়ে এসে রিসোর্টে হামলা চালানো হবে।”
তিনি আরও জানান, রানা শুধু ভয়ভীতি দেখিয়েই ক্ষান্ত হননি—রিসোর্টে গিয়ে স্টাফদের একটি কক্ষে আটকে রাখেন এবং হটলাইন বন্ধ করে দেন। পরে রিসোর্ট কার্যত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তারা। এখন সেখানে কেবল কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী অবস্থান করছেন।
ঘটনার প্রমাণ হিসেবে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ একাধিক ফোনালাপের রেকর্ড সংরক্ষণ করেছে। একটি ফোন কলে রাসেল রানা রিসোর্টের ম্যানেজারকে বলেন, “সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রিসোর্টে কোনো অতিথি প্রবেশ করতে পারবে না। চেয়ারম্যান এলে আমি এলাকাবাসী নিয়ে ভেতরে ঢুকে যাব।”
রিসোর্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক কর্মীকেও রানা সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “এখানে অবৈধ কাজ হয়। এখন থেকে চেয়ারম্যানকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। কেউ প্রবেশ করলে তোমার পিঠের চামড়া থাকবে না। গেটে তালা লাগাও।”
তবে রাসেল রানা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন, “রিসোর্টে অনৈতিক কাজ হয়, তাই স্থানীয় জনগণের সিদ্ধান্তে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, বালু কারা ফেলে গেছে তা তার জানা নেই।
এ বিষয়ে গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সিদ্দিক হোসেন বলেন, “আমরা চাঁদা দাবির একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। রিসোর্ট কর্তৃপক্ষকে চালু রাখতে বলা হয়েছে, কিন্তু তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।”
এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। তবে চাঁদাবাজি, হুমকি এবং অবৈধ ক্ষমতার ব্যবহার নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা নিয়ে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    