

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম সীমান্ত লাগোয়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরে ফের ভয়াবহ সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছে সীমান্ত অঞ্চল।
গত রাত সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর পর্যন্ত প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ এপারে ভেসে আসছে। ত্রিমুখী সংঘর্ষ চলছে।
গোলাগুলিতে দু’পক্ষের ২০ জনের অধিক হতাহত হয়েছে বলে একাধিক সুত্র জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে পুরো সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী লোকজনের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা নাগাদ সংঘর্ষ শুরু হয়ে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে চলতে থাকে। ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাড়ি, দক্ষিণ ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত লাগোয়া পাহাড়ি এলাকার ওপার থেকে ভারী অস্ত্র, রকেট লাঞ্চার, গ্রেনেড ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানায়, রাতে শিশু-নারীরা আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে পারেনি।কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যান নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে রাখাইন রাজ্যের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি ।
এই বাহিনী রাখাইনের কিছু অংশ থেকে আরসা ও আরএসও'কে হটাতে সামরিক অভিযান জোরদার করেছে।
গতকাল রাতের সংঘর্ষে আরাকান আর্মির প্রায় ১০০-১৫০ জন সদস্য একযোগে তিনটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর জবাবে আরসা ও আরএসও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষেরই ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সীমান্ত নজরদারি সংস্থার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,প্রাথমিকভাবে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে অন্তত ২০ জনের বেশি হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সংঘর্ষস্থল মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গভীর জঙ্গলাকীর্ণ এলাকা হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য পাওয়া কঠিন।
সীমান্ত পরিস্থিতি নজরে রেখে ৩৪ বিজিবি (কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন) ঘুমধুম, তুমব্রু ও বাইশফাড়ি সীমান্তপয়েন্টে টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে।
প্রত্যক্ষ সংঘর্ষ বাংলাদেশ সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকলেও, বিজিবি সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় অবস্থান করছেন।বিজিবি’র একজন কর্মকর্তা জানান,
"আমরা সীমান্ত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সীমান্তে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা নিরাপত্তা ঝুঁকি সহ্য করা হবে না। প্রতিটি চেকপোস্টে সদস্যরা প্রস্তুত অবস্থায় আছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান,সীমান্তে রাতে গোলাগুলির শব্দ এতটাই প্রবল ছিল যে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ঘুমাতে পারেনি।
অনেক পরিবার নিরাপত্তার কারণে আত্মীয়দের বাড়িতে সরে গেছে। বিজিবির পক্ষ থেকে স্থানীয়দের নিরাপদে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারিনি।
বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম বলেন তিনি বলেন, ‘রাতে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসার খবরটি শুনে সীমান্ত পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছি।
এটা মিয়ানমার অভ্যন্তরে দেশটির সশস্ত্র গোষ্টিগুলোর মধ্যে সংঘাতের জেরে ঘটতে পারে।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তের বাসিন্দাদের আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে খায়রুল আলম বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবির সতর্কতার সাথে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। এপারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
