

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় পোশাককারখানা ও রাসায়নিক গুদামে হওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত বরগুনার দুই যুবকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাতেই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত করে পুলিশ পরিবারকে হস্তান্তর করে।
পরে সোমবার (২০ অক্টোবর) দু’জনকে তাদের গৃহগ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মরদেহ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই নিহতদের এলাকায় বিরাজ করেছে শোকের ছায়া।
নিহতরা হলেন, বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর বান্দরগাছিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে খালিদ হাসান সাব্বির (২৯) ও আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের মধ্য তারিকাটা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে আল মামুন (৩৮)।
খালিদের জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠিত হয় সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় বান্দরগাছিয়া মাদ্রাসা মাঠে। একই দিন সকালে (সকাল ১০ টায়) আমতলীর মধ্য তারিকাটা গ্রামে জানাজা শেষে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার আল মামুনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আত্মীয়স্বজন ও হাজারো মানুষ অংশ নেন।
পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা জানান, খালিদ মাত্র এক মাস আগে ঢাকায় ভাগ্য পরিবর্তনের প্রত্যাশায় গার্মেন্টসে চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন। এর আগে তিনি বরগুনার একটি শোরুমে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন খেলাঘর শিশু সংগঠন ও বিডিক্লিন বরগুনা জেলা টিমের সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক এবং পরিবারের একমাত্র ছেলে। ঘটনার দিন থেকে খালিদ নিখোঁজ ছিলেন; রাত পর্যন্ত মোবাইল অন থাকার পর পরে বন্ধ হয়ে যায়।
নিহত আল মামুন ঢাকায় পরিবার নিয়ে বাস করতেন এবং গার্মেন্টসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন, এক সন্তানের বয়স দেড় বছর, অন্যটির পাঁচ বছর। প্রতিবেশী নজরুল জানান, আল মামুন তাদের পরিবারের জন্যই ছিলো আবেগপ্রবণ সমর্থক; এমন অকাল মৃত্যুতে পরিবার স্থবির হয়ে পড়েছে।
আল মামুনের স্ত্রী ইসরাত জাহান অ্যামি বলেন, যার যাবার সে তো চলে গেছে, এখন দুই সন্তানকে মানুষ করবো কীভাবে তা ভাবতেই ভয় লাগে।
তার বৃদ্ধা মা আম্বিয়া বেগম বুকফাটা কান্নায় বলেন, মোর আর কেউ নাই, কেডা মোরে ঔষধ কেনার টাহা দেবে? আল্লাহ ওরে না নিয়া মোরে নিতো!
সাবেক সেনা সদস্য মনিরুল ইসলাম জোমাদ্দার, খালিদের পিতা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছেলেটা মাত্র মাসখানেক আগে ঢাকায় চাকরি নিতে গিয়েছিল। খালিদ আমার একমাত্র ছেলে—এখন আমাকে আর কে আব্বা বলে ডেবে? কেউ যদি আমাকে ১০ কোটি টাকা দেয়, তবু আমার ছেলেকে ফেরাতে পারবো না। আমি চাই, এই ঘটনার দায়ীদের শাস্তি হোক।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
