

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বরিশাল মহানগরীর বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও গণব্যবহারের ফুটপাথ আবারও দখলের কবলে পড়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানের পরও অল্প সময়ের ব্যবধানে পুনরায় অবৈধ দোকানপাট ফিরে আসছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক শ্রেণির নবগঠিত ও সক্রিয় চাঁদাবাজ চক্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় এসব অবৈধ স্থাপনা আবার দখল করে নেওয়া হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নগরীর বেলপার্ক, নবগ্রাম রোড, চৌমহনী লেকের পাড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই অধিকাংশ স্থানে আবার পথ খাবারের দোকান ও অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব দোকান থেকে প্রতিদিনই বিপুল অঙ্কের চাঁদা আদায় করছে স্থানীয় দখলদার ও তাদের পৃষ্ঠপোষক চক্র।
বেলপার্ক এলাকার উত্তর পাশের সড়কটি উচ্ছেদের পরও নগর প্রশাসকের বাসা ঘেরাও করে পুনরায় দোকান স্থাপনের সুযোগ আদায় করে নেয় দখলদাররা। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পার্কের উত্তর দিক দিয়ে মাঠে প্রবেশ করাই প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
একই চিত্র দেখা গেছে নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেক এলাকাতেও। লেকের পূর্ব পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও দক্ষিণ ও পশ্চিম পাড়ে অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম্য এখনো বহাল রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন সেখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
নগরীর ৩০ গোডাউন সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর তীরের ‘শতায়ু অঙ্গন’ এলাকা থেকেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই আবার দোকানপাট ও দখলদাররা ফিরে আসে। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে বিবির পুকুরের দক্ষিণ পাড়েও।
দখল ও দুষণের এই পুনরাবৃত্তিতে শহরের পরিবেশ ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পেটের পীড়ায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ভর্তি হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অপরিকল্পিত দখল, দূষণ ও ফুটপাথে খাবার বিক্রি—সব মিলিয়ে নগরীর স্বাস্থ্যঝুঁকি আশঙ্কাজনক মাত্রায় পৌঁছেছে।
নগরবাসীর দাবি, পথ খাবার বিক্রেতাদের বিষয়ে একটি স্থায়ী ও মানবিক সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি। পাশাপাশি, যাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতায় এসব অবৈধ দোকানপাট বারবার ফিরে আসছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনারও আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
মন্তব্য করুন