

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইসরাইলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও থামেনি আগ্রাসন। প্রতিদিনের বোমাবর্ষণ, অবরোধ ও হত্যাযজ্ঞের মধ্যে গড়ে উঠছে এক নতুন দুঃসহ বাস্তবতা-দ্রুত বাড়ছে অনাথ শিশুদের সংখ্যা।
গাজার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপসচিব ড. রিয়াদ আল-বিতার শনিবার জানান, বর্তমানে উপত্যকায় অনাথ শিশুর সংখ্যা আনুমানিক ৫৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে। সংঘাত শুরুর আগে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭ হাজার। অর্থাৎ, যুদ্ধের দুই বছরে অনাথ শিশুর সংখ্যা প্রায় তিনগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ড. রিয়াদ জানান, ইসরাইলি আগ্রাসনে অন্তত ৪০ হাজার শিশু তাদের বাবা-মা বা অভিভাবকের একজনকে হারিয়েছে। হাজারো শিশু আবার উভয় অভিভাবককেই হারিয়ে একা জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
গাজার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এতিম শিশুদের পুনর্বাসনে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে তাদের মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাশাপাশি ‘পূর্ণ যত্ন’ নিশ্চিত করতে নতুন অনাথ আশ্রম ও সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও চলছে।
রিয়াদ আল-বিতার বলেন, গাজায় এখন অন্তত পাঁচটি নতুন অনাথ আশ্রম জরুরিভাবে প্রয়োজন। একই সঙ্গে যেসব পরিবার এতিম শিশুদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদেরও আর্থিক সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।”
তিনি আরও জানান, মানবিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় সরকার একটি ডিজিটাল ডাটাবেস তৈরি করছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনাথ শিশুদের তথ্য একত্রে সংরক্ষণ করে সহায়তা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুধু প্রাণহানি নয়, ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ও বয়ে এনেছে। ড. রিয়াদ বলেন, যুদ্ধের কারণে প্রায় সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। গাজায় দারিদ্র্য এখন সর্বব্যাপী- কে সবচেয়ে দরিদ্র, তা নির্ধারণ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
তার হিসাবে, বর্তমানে গাজায় দারিদ্র্যের হার ৯৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তিনি বলেন, জীবিকা হারানো, খাদ্য সংকট এবং ইসরাইলি দখলদারদের পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অবরোধনীতি এই সংকটকে আরও গভীর করছে।
গাজার শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। যুদ্ধ তাদের শিক্ষা, পরিবার, নিরাপত্তা ও স্বপ্ন সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। ফলস্বরূপ ভয়, সহিংসতা ও শিশুশ্রম আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে।
এদিকে, নারীরাও সবচেয়ে বড় বিপদের মুখে। তারা এমন এক অনিরাপদ পরিবেশে দিন কাটাচ্ছে যেখানে জীবন, মর্যাদা ও নিরাপত্তা- তিনটিই অনিশ্চিত।
মন্তব্য করুন
