

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সীমান্ত জুড়ে ভয়াবহ গোলাগুলি ও প্রাণহানির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠা পাকিস্তান ও আফগানিস্তান শেষ পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে।
এই সাময়িক অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা)। তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি, সূত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে ইসলামাবাদের একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—সংঘাত যতই জটিল হোক, উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি ইতিবাচক ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। যুদ্ধ নয়, শান্তির পথে অগ্রসর হওয়ার জন্যই এই যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ।
পাকিস্তান দাবি করেছে, এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছে আফগান সরকারের পক্ষ থেকেই। তবে আফগানিস্তান এখনও এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এই অবস্থান দ্বন্দ্বপূর্ণ করে তুলছে সামগ্রিক প্রেক্ষাপট, যেখানে উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে ভয়াবহ হামলার অভিযোগ তুলেছে।
অস্ত্রবিরতির আগে রাতভর গোলাগুলিতে দুই দেশই ব্যাপক সামরিক তৎপরতা চালিয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা আফগান সীমান্তে একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি ও নিরাপত্তা পোস্টে হামলা চালিয়ে "ডজনখানেক আফগান নিরাপত্তা সদস্য ও বিদ্রোহীকে" হত্যা করেছে।
আমরা কেবলমাত্র প্রতিরক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আফগান বাহিনী প্রথমে আগ্রাসন চালায়, আমাদের বাহিনী তখন পাল্টা ব্যবস্থা নেয়।
তাদের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আমরা একাধিক পাকিস্তানি পোস্টে পাল্টা আঘাত হেনেছি। শত্রুপক্ষের একটি ট্যাংক আমাদের দখলে এসেছে, এবং একাধিক স্থাপনায় আমরা আঘাত হেনেছি।
ইসলামাবাদ দাবি করছে, আফগানিস্তান তাদের ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য দায়িত্বশীল। বিশেষ করে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ঘন ঘন যে হামলা হচ্ছে, তা আফগান সীমান্ত থেকেই সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
পাকিস্তানের বক্তব্য, ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে। আফগান মাটিতে আশ্রয় নেওয়া জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে।
তালেবানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া: আফগান ভূখণ্ড কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না
তালেবান সরকার যদিও সরাসরি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কথা বলেনি, তবে পূর্বের এক বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন— আফগানিস্তানের ভূমি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে হামলায় ব্যবহৃত হবে না—এটি তালেবানের স্পষ্ট নীতি।
যদিও সাময়িক অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে, তবে দুই দেশের মধ্যে গভীর আস্থার সংকট বিদ্যমান। সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি ও কূটনৈতিক বক্তব্যে যুদ্ধাবস্থা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়নি।
৪৮ ঘণ্টার এই বিরতি হয়তো বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে সহায়ক হবে, তবে মূল সমস্যা না মিটলে পরিস্থিতি যে কোনো সময় আবারও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মন্তব্য করুন
