

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


প্রায় দুই দশক ধরে মধ্য এশিয়ায় ভারতের কৌশলগত উপস্থিতির প্রতীক তাজিকিস্তানের আয়নি বিমানঘাঁটি থেকে অনেকটা নীরবে সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে নয়াদিল্লি। এটি ছিল বিদেশে ভারতের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সামরিক ঘাঁটি। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণ দেখাচ্ছে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রত্যাহারের পেছনে রাশিয়া ও চীনের চাপকে দায়ী করছে।
আয়নি ঘাঁটির কৌশলগত গুরুত্ব
তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আয়নি বিমানঘাঁটি ছিল ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোভিয়েত আমলে নির্মিত এই জরাজীর্ণ ঘাঁটিটি ভারত ২০০২ সালে তাজিক সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে সংস্কার করে।
ঘাঁটিটি আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের সংযোগস্থলের কাছে।
এই কৌশলগত অবস্থান ভারতকে পাকিস্তান ও চীনের ওপর নজরদারি এবং আফগানিস্তান–মধ্য এশিয়া অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দিয়েছিল। ভারতীয় সীমান্ত সড়ক সংস্থার মাধ্যমে এর রানওয়ে ৩,২০০ মিটার পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ায় যুদ্ধবিমান ও ভারী পরিবহন প্লেন এখানে সহজে চলাচল করতে পারত।
ভারত ২০২২ সালে নীরবে আয়নি ঘাঁটি থেকে সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম প্রত্যাহার শুরু করে। ওই সময় তাজিক সরকারের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, তাজিকিস্তান সরকার নতুন করে লিজ নবায়নে আগ্রহী হয়নি। এর প্রধান কারণ হিসেবে রাশিয়া ও চীনের তীব্র কূটনৈতিক চাপকে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০২২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাঁটিটি তাজিকিস্তান সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভারতের সামরিক ও কৌশলগত ক্ষতি
আয়নি ছিল ভারতের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিদেশি সামরিক ঘাঁটি। এই প্রত্যাহারের ফলে: ভারত মধ্য এশিয়ায় তার সামরিক উপস্থিতি ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ হারালো। ঘাঁটিটি থেকে আফগানিস্তান, চীন ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারির যে কৌশলগত সুবিধা মিলতো, বিশেষ করে ওয়াখান করিডর ও শিনজিয়াং অঞ্চলের কাছাকাছি থাকার কারণে, সেই সুবিধাও হারালো ভারত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রত্যাহারের ফলে ওই অঞ্চলে ভারতের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে পারে।
সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
মন্তব্য করুন
