

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


দিল্লি হাইকোর্ট সম্প্রতি এমন একটি রায় দিয়েছে যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কেবল ‘শারীরিক সম্পর্ক’ কথাটি উচ্চারণ করলেই তা ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে না।
আদালতের মতে, এই ধরনের শব্দের ব্যবহার কোনো প্রমাণ ছাড়া ধর্ষণ বা জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কের মামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।
বিচারপতি মনোজ কুমার ওহরির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ১৭ অক্টোবরের রায়ে এক ব্যক্তিকে খালাস দিয়েছেন, যিনি এর আগে ১০ বছরের সাজা ভোগ করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ ছিল, ২০১৪ সালে অভিযুক্ত ব্যক্তি এক ১৬ বছরের কিশোরীর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বছরের সময় ‘শারীরিক সম্পর্ক’ বজায় রেখেছিলেন।
তবে আদালতে প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি যে, সেই সম্পর্কের প্রকৃতি বা সীমা কী ছিল। কিশোরী ও তার পরিবার কেবল বলেছেন, ‘শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে,’ কিন্তু তা ব্যাখ্যা করেননি।
আদালত মন্তব্য করেছে, অস্পষ্টভাবে বলা ‘শারীরিক সম্পর্ক’ কথাটি আইনগতভাবে ধর্ষণ প্রমাণের মানদণ্ডে পড়ে না।
আদালত আরও বলেছে, প্রসিকিউশন বা নিম্ন আদালত কিশোরীর কাছে পর্যাপ্ত প্রশ্ন করেনি যে, সে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছিল। তাই অপরাধের মূল উপাদান প্রমাণিত হয়নি।
বিচারপতি ওহরি বলেন, শিশু সাক্ষীর বক্তব্য যদি অসম্পূর্ণ হয়, আদালতের দায়িত্ব থাকে প্রশ্ন করে তা পরিষ্কার করা। আদালত কোনো অবস্থাতেই নির্বিকার থাকতে পারে না।
ফরেনসিক রিপোর্ট বা চিকিৎসা প্রমাণের অভাব থাকায় পুরো মামলা কেবল মৌখিক সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করেছিল। রায়ে আরও বলা হয়েছে, ‘শারীরিক সম্পর্ক’ শব্দটি ভারতীয় দণ্ডবিধি বা পকসো আইনে সংজ্ঞায়িত নয়, তাই এর অর্থ নির্ভর করে সাক্ষীর ব্যাখ্যার ওপর।
আদালতের ভাষায়, এই মামলায় তা ব্যাখ্যা করা হয়নি, তাই অপরাধ প্রমাণিত বলা যাবে না। আদালত ভবিষ্যতের জন্যও সুপারিশ করেছে যে, শিশু সাক্ষীর ক্ষেত্রে আদালতকে আরও সক্রিয় ও অংশগ্রহণমূলক ভূমিকা রাখতে হবে, যাতে সত্য উদঘাটন হয়।
আইনজীবীদের মতে, এই রায় যৌন অপরাধ মামলায় প্রমাণের মানদণ্ড নতুনভাবে নির্ধারণ করবে। সমাজে ‘শারীরিক সম্পর্ক’ শব্দটি যেভাবে ব্যবহৃত হয়, তা আইনগতভাবে এক নয়—এটাই রায়ের মূল বার্তা।
মন্তব্য করুন
