

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত বন্ধ করায় কৃতিত্ব নিয়েছেন এবং এরপর রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এই দুটি দাবিই ভারতের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
প্রথম ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্ট করেছেন, সংঘর্ষ বন্ধের সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে এবং পাকিস্তান প্রথমে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছিল।
রাশিয়ার তেল সংক্রান্ত ট্রাম্পের দাবি এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে কোনো মন্তব্য হয়নি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে ফোনে এই বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, আমি জানি না। ওরা যদি এরকম কথা বলে, তাহলে তারা বিপুল পরিমাণ শুল্ক দিতে থাক।
সাধারণত কূটনৈতিক দাবি ও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ্যে একতরফা দেওয়া হয় না। কিন্তু এবার প্রকাশ্যে ট্রাম্পের দাবি ও ভারতের পক্ষের সরাসরি প্রত্যাখ্যান একসঙ্গে ঘটে, যা বিরল।
ওপি জিন্দল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, এতে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সামাজিক মাধ্যমে উভয় বিবৃতি মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।
সাবেক কূটনীতিক কে সি সিং মন্তব্য করেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে কূটনীতি দুইভাবে হতে পারে: সরাসরি আলোচনা বা চাপ দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ। মোদি এখানে যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের নীতি হলো স্বার্থ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া, এবং তেল কেনা বন্ধের বিষয়ে ভারত এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সাম্প্রতিক ছয় মাসে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় ৩৫%।
বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়: ভারত রাশিয়া থেকে তেল কমাতে পারে, কিন্তু বন্ধ হবে না। রাশিয়া প্রতিরক্ষাক্ষেত্রেও বড় সহযোগী।
জয়ন্ত রায়চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক: ভারত কখনও রাশিয়া থেকে তেল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করবে না। রাশিয়া দীর্ঘদিনের ছাড় দেওয়ায় কেনা বেড়েছে, এখন কমানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক সঠিক রাখতে হবে, কিন্তু দেশের স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কও বজায় রাখা জরুরি।
শ্রীরাধা দত্ত বলেন, এ ধরনের বিতর্ক দক্ষিণপন্থী রাজনীতিতে সুবিধা বাড়াতে পারে।
জয়ন্ত রায়চৌধুরী যোগ করেন, বিহারের নির্বাচন সামনে। কংগ্রেস ও আরজেডির মহাজোট এই বিতর্ককে ব্যবহার করছে। ভারতকে স্বতন্ত্র কূটনীতিতে চলতে হবে।
ভারতের চ্যালেঞ্জ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবির চাপের মধ্যে স্বার্থপর ও ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি অবলম্বন করা, যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কও ক্ষুণ্ণ না হয়।
মন্তব্য করুন
