

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


জাপান প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে-এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে। দলে শীর্ষ প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে উঠে এসেছেন কট্টর রক্ষণশীল রাজনীতিবীদ সানায়ে তাকাইচি। নারী নেতৃত্বে দীর্ঘদিন পিছিয়ে থাকা জাপানের জন্য এটি হতে পারে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
আগামী ৪ অক্টোবর এলডিপির নেতৃত্ব বাছাইয়ের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। জরিপে তাকাইচি এগিয়ে থাকলেও কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। গত বছর তিনি অল্পের জন্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার কাছে হেরে গিয়েছিলেন। এবার সংসদীয় ভোটেও জয়ী হলে তাকাইচি হবেন জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।
রাজনীতি ও লিঙ্গ বিষয়ে গবেষক হিরোকো তাকেদার মতে, একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হলে তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জাপানকে নতুনভাবে তুলে ধরবে। অথচ রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে দেশটি এখনো অনেক পিছিয়ে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সর্বশেষ লিঙ্গ বৈষম্য সূচকে জাপান ১১৮তম স্থানে রয়েছে। বর্তমানে জাপানের নিম্নকক্ষ পার্লামেন্টে নারী সদস্যের সংখ্যা মাত্র ১৫.৭%, যা বৈশ্বিক গড় ২৭.১% এবং এশীয় গড় ২২.১% এর চেয়ে অনেক কম।
নারা প্রিফেকচারে জন্ম নেওয়া তাকাইচি জানান, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার তার অনুপ্রেরণা। তিনি এক সময় নারী ইস্যুতে তেমন সক্রিয় ছিলেন না, তবে সাম্প্রতিক সময়ে অবস্থানে পরিবর্তন এনেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তাকাইচি প্রতিশ্রুতি দেন, বেবিসিটারের খরচ আংশিক করছাড়ের আওতায় আনা হবে এবং যেসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব শিশু পরিচর্যা সুবিধা দেবে তাদের কর সুবিধা দেওয়া হবে।
নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নার্সিং, কেয়ারগিভিং এবং সন্তান লালন-পালনের কারণে যেন কেউ চাকরি ছাড়তে বাধ্য না হয়, সে জন্য নীতিগত পরিবর্তন আনা হবে। এমনকি মেনোপজ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়েও তিনি সচেতনতা তৈরির অঙ্গীকার করেছেন।
অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোইজুমি লিঙ্গ সমতা ও বৈচিত্র্যের পক্ষে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। তিনি সংসদে এমন প্রস্তাবের সমর্থন করেছিলেন যেখানে বিবাহিত দম্পতিদের আলাদা পদবি রাখার অনুমতি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাকাইচি এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও এবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা যেমন প্রবল, তেমনি ঝুঁকিও রয়েছে। এলডিপি সাম্প্রতিক নির্বাচনে দুটি বড় ধাক্কা খেয়েছে এবং পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বিভক্ত সংসদে বাজেট ও অর্থনৈতিক সংস্কার পাস করাতে বিরোধীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে। এ কারণে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই সরকার দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে এবং অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে পারে।
এর আগে উন্নত দেশগুলোতেও সংকটকালে নারী নেতাদের ক্ষমতায় আসার নজির রয়েছে। যেমন—২০১৬ সালে ব্রেক্সিট সংকটের সময় যুক্তরাজ্যে দায়িত্ব নেন থেরেসা মে, ২০২২ সালে অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস। একইভাবে ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার লিবারেল পার্টির ইতিহাসে প্রথম নারী নেতা হন সুসান লেই।
সূত্র: জাপান টাইমস
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    