বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুপার ওভারে বাংলাদেশের পরাজয়

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৭ পিএম
expand
সুপার ওভারে বাংলাদেশের পরাজয়

সুপার ওভারে নাটকীয় হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ হাতছাড়া করল বাংলাদেশ। মিরপুরে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মূল ম্যাচ টাই হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। আর সেখানেই হোঁচট খায় টাইগাররা।

১১ রানের লক্ষ্য নিয়ে সুপার ওভারে ব্যাট করতে নামেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। তবে ওভারের শুরুতেই বাজে বোলিং করেন ক্যারিবীয় স্পিনার আকিল হোসেন। প্রথম বলেই ওয়াইড ও পরের বলে করেন নো, ফলে কোনও বল না করেই স্কোরবোর্ডে ৪ রান। সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ বলে ৬ রানের সহজ লক্ষ্য।

কিন্তু এরপর শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়। প্রথম বৈধ বলে এক রান নেন সৌম্য। দ্বিতীয় বল ডট হয়, তৃতীয় বলে এক রান নেয় সাইফ। চতুর্থ বলে আউট হয়ে যান সৌম্য। নতুন ব্যাটার শান্ত পঞ্চম বলে নিতে পারেন মাত্র এক রান। শেষ বলে দরকার ছিল ৩ রান, কিন্তু সাইফ নিতে পারেন মাত্র এক রান। ফলে ১ রানে ম্যাচ ও সিরিজ হারতে হয় বাংলাদেশকে।

এর আগে ক্যারিবীয়দের দেওয়া ১১ রানের লক্ষ্য রক্ষায় বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। তার প্রথম বলে ১ রান নেন শাই হোপ। দ্বিতীয় বলেই রাদারফোর্ড ক্যাচ তুলে দেন। প্রথম পাঁচ বলে খরচ করেন ৬ রান, কিন্তু শেষ বলে হোপ মারেন বাউন্ডারি। এতে ১০ রানে থামে উইন্ডিজ ইনিংস, যা পরে যথেষ্ট হয়ে দাঁড়ায়।

মূল ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১৩ রান করে স্বাগতিকরা। ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৫ রান আসে ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে একই রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাংলাদেশের হয়ে নতুন বল হাতে ইনিংস শুরু করেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। ইনিংসের তৃতীয় বলেই ব্রেন্ডন কিংকে এলবিডব্লিউ করে দলকে এনে দেন সেরা শুরু। শুরুতেই দুই প্রান্তে স্পিন আক্রমণে যান অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।

দ্বিতীয় উইকেটে কেসি কার্টি ও আলিক আথানজে গড়েন কার্যকরী জুটি। পরে রিশাদ হোসেন দু’জনকেই এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়ে দেন। এরপর অগাস্টে, রাদারফোর্ড ও রোস্টন চেসরা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৩৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় ক্যারিবীয়রা।

তবে শেষদিকে শাই হোপ ও জাস্টিন গ্রেভস গড়েন গুরুত্বপূর্ণ ৪৪ রানের জুটি। মিরাজের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট হন গ্রেভস (২৬)। এরপর আকিল হোসেন ১৬ রান করে আউট হলেও অপরপ্রান্তে অবিচল ছিলেন হোপ, শেষ পর্যন্ত ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

টপ অর্ডারে সাইফ হাসান আবারও ব্যর্থ। ১৬ বলে করেন মাত্র ৬ রান। হৃদয়, শান্ত, অঙ্কন—তিনজনই ইনিংস শুরু করেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন। তিনজনের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ১২, ১৫ ও ১৭ রান।

দারুণ ব্যাট করছিলেন সৌম্য সরকার। ৮৯ বল খেলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৪৫ রান। কিন্তু ফিফটি ছুঁই ছুঁই করে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

মাঝের ধসে দল যখন বিপদে, তখন ব্যাটিং অর্ডারে উঠে এসে কিছুটা চমক দেখান নাসুম আহমেদ। এক ছক্কায় করেন ১৪ রান। এরপর নুরুল হাসান সোহান ২৪ বলে ২৩ রান করে দলকে কিছুটা এগিয়ে নেন।

তবে মূল ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটা আসে রিশাদ হোসেনের ব্যাটে। ৪৬তম ওভারে যখন সোহান আউট হন, তখন স্কোর ছিল ১৬৩। সেখান থেকে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১৪ বলে ৩৯ রান করে বাংলাদেশকে এনে দেন লড়াই করার মতো পুঁজি। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৩২ রানে (৫৮ বল)।

মিরপুরের চিরচেনা স্পিনবান্ধব উইকেটে দুই দলই সংগ্রামী ব্যাটিং করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছোট ছোট ভুলের কারণে হেরে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সুপার ওভারে খেলতে নেমে হারের স্বাদ পেল টাইগাররা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন