

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসভবনে নর্ডিক তিন দেশের রাষ্ট্রদূতদের একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্রের বরাতে জানা যায়, সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরের দিকে গুলশান-২ এ অবস্থিত তার বাসায় এই বৈঠক হয়।
এতে অংশ নেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন আরাল্ড গুলব্রানসেন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস এবং ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মলার। তিনজনই স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের প্রতিনিধি, যারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার ইস্যুতে সক্রিয় সহযোগিতা দিয়ে আসছেন।
বৈঠকটি প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে বলে সূত্রটি জানায়। রাষ্ট্রদূতেরা কোনো অফিসিয়াল পতাকা বা গাড়ির কূটনৈতিক চিহ্ন ব্যবহার না করে একসঙ্গে সেখানে যান এবং ফেরার সময় বিকল্প পথ বেছে নেন। এমন আয়োজন সাধারণ কূটনৈতিক সাক্ষাতের ক্ষেত্রে সচরাচর দেখা যায় না, যা বৈঠকের গুরুত্ব ও সংবেদনশীলতা বাড়িয়েছে।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের দাবি, আলোচনায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়গুলো উঠে আসে। কূটনীতিকরা আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে তা আরও প্রতিযোগিতামূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ হবে বলে মত দেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১১ মে সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনেরও বৈঠক হয়। সেবারও বৈঠকটি ছিল অনানুষ্ঠানিক ও গোপনীয়। তখনও আলোচনায় দলটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও পুনর্গঠনের বিষয় উঠে আসে বলে জানা যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সংকটে আছে। গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দলের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। সেই অবস্থায় সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে তিন রাষ্ট্রদূতের এই সাম্প্রতিক বৈঠক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দলটির ভবিষ্যৎ ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়েও মতবিনিময় হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া পক্ষগুলোর কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, সাবের হোসেন চৌধুরী গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় গ্রেপ্তার হন এবং পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান। তিনি একাধিক মামলা মোকাবিলা করছেন। নর্ডিক দেশগুলোর সঙ্গে তার অতীত কাজের সম্পর্কের কারণেই এই রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে তার যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও বলা হয়, বৈঠক শেষে রাষ্ট্রদূতেরা চৌধুরীর বাসভবন থেকে বিকেল ৫টার পর নীরবে বের হয়ে যান।
বিষয়টি নিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরীর মন্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সূত্র কালবেলা
মন্তব্য করুন
