বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র হতে পারছে না

মামুন খান
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫২ পিএম আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম
একশো বিয়াল্লিশটি দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেয়
expand
একশো বিয়াল্লিশটি দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেয়

বিশ্বে জাতিসংঘের সদস্য দেশ বর্তমানে একশো তিরানব্বইটি। এর মধ্যে দেড়শটির বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তবে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু প্রভাবশালী দেশ।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফ্রান্সও সে পথে এগোচ্ছে।

বড় বাধা রয়ে গেছে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র, যারা বলে থাকে—অনেক দেশ কেবল আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার জন্য ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও মনে করেন, এসব স্বীকৃতির মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। সম্প্রতি তিনি মন্তব্য করেছেন, ফিলিস্তিন নামে কোনো রাষ্ট্র কখনো হবে না।

জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে বাধা

গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেখানে একশো বিয়াল্লিশটি দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেয়, দশটি দেশ বিপক্ষে, আর বারোটি দেশ বিরত থাকে।

প্রস্তাবটি পাস হলেও জাতিসংঘ সনদের ৪ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চূড়ান্ত সদস্যপদ পেতে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন জরুরি।

সেখানে পনেরো সদস্যের মধ্যে অন্তত নয়টির সমর্থন প্রয়োজন এবং পাঁচ স্থায়ী সদস্যের কেউ ভেটো দিতে পারবে না।

যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষে নয়। তাদের ভেটোই জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের প্রধান অন্তরায়।

কেউ মনে করেন, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপ সামলাতেই অনেক দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

আবার অনেকে বলেন, এই স্বীকৃতি ইসরাইলকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করছে। এতে গাজার পরিস্থিতিতে সরাসরি পরিবর্তন না এলেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে বাস্তব পদক্ষেপের ইঙ্গিত রয়েছে।

কিছু বিশ্লেষকের মতে, এটি মূলত প্রদর্শনমূলক পদক্ষেপ। যতক্ষণ না এর সঙ্গে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মতো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়, ততক্ষণ বাস্তব প্রভাব সীমিত থাকবে।

স্বীকৃতি পেলেও ফিলিস্তিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া নতুন কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য হতে পারবে না। জাতিসংঘেও বিশেষ অধিকার পাওয়ার সুযোগ নেই।

তবে স্বীকৃত দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি এবং রাজনৈতিক বৈধতা পাওয়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ।

ফলত, পশ্চিমা বিশ্ব ক্রমশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ায় ইসরাইল কূটনৈতিক চাপে পড়ছে এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের পথ কিছুটা হলেও মসৃণ হচ্ছে।

লেখক : সিনিয়র কোর্ট রিপোর্টার

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন