বুধবার
১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন অটোরিকশাই কাল হলো ১৬ বছরের শান্তর 

এনপিবি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৩ পিএম
নিহত শান্ত (১৬)
expand
নিহত শান্ত (১৬)

রিকশা চালিয়ে উপার্জন করে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টাও করছিল শান্ত (১৬)। এজন্য নতুন অটোরিকশা কিনেছিলো সে, চালাচ্ছিলো রাজধানীর উত্তরা এলাকায়। কিন্তু এই অটোরিকশাই তার জীবনে কাল হয়ে আসবে সে বিষয় বুঝতে পারেনি শান্তর পরিবার।

গত রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর তুরাগ এলাকায় দুর্বৃত্তরা শান্তকে গলা কেটে হত্যা করে। ঘটনার পর অটোরিকশাটি ছিনতাই করা হয়। পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডটি ছিল সুপরিকল্পিত, শান্তকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের কথা জানান উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. মুহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১৭ নভেম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে তুরাগের ১৭ নম্বর সেক্টরের ৭নং ব্রিজের পূর্বপাশে এইচ ব্লকের একটি ফাঁকা জমি থেকে অজ্ঞাত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তথ্য উদ্ঘাটন ও অপরাধীদের ধরতে কাজ শুরু করে পুলিশ। এরই মধ্যে জানা যায়, কাফরুল থানায় নিখোঁজের একটি জিডি করা হয়েছে। সেই সূত্রে পুলিশ যোগাযোগ করলে পরিবারের সদস্যরা মরদেহ দেখে চিহ্নিত করে শান্তকে।

তিনি জানান, নিহতের নাম-পরিচয় পেয়ে পুরো ঘটনায় মাঠপর্যায়ের তদন্ত আরও বেগবান করা হয়। তদন্তে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ থানা পুলিশ অত্যন্ত দ্রুততার সাথে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করে। প্রথমে কাফরুল থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. সামিদুল হক মনাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোঃ রবিউল ইসলাম রানা, হজরত আলি ও মোঃ নয়ন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য ও তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করার উদ্দেশ্য তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে শান্তকে ৭ নম্বর ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কৌশলে ফাঁকা জমিতে নিয়ে গিয়ে রবিউল ইসলাম রানা নাইলনের রশি দিয়ে গলা চেপে ধরে এবং সামিদুল হক মনা ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে শান্তকে হত্যা করে। পরে তারা অটোরিকশাটি নিয়ে ভাষানটেকের দিকে চলে যায় এবং হজরত আলির সহায়তায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নয়ন মিয়ার নিকট ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে।

ডিসি মুহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে আজ (১৯ নভেম্বর) নেত্রকোনার দুর্গাপুর থেকে ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয় এবং ক্রেতা মোঃ নয়ন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। একই সাথে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও বিশেষ কায়দায় তৈরি নাইলনের রশি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় তুরাগ থানায় নিয়মিত হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন