

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে দেড় হাজার পরিবার রাতারাতি সব হারিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছে। আগুনে ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো এখন কোথায় আশ্রয় নেবে-এমন প্রশ্নে তাদের সময় কাটছে অনিশ্চয়তায়।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বস্তির ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে তার আগে পুরো এলাকা জুড়ে কাঁচা ঘরের সারি ভস্মীভূত হয়ে যায়। রাত নামতেই শত শত মানুষ বাধ্য হয় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে।
অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিগ্রস্তদের কান্না আর অসহায়ত্বে বস্তির পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
৭ বছর ধরে কড়াইলে থাকা লাভলী বেগম বলেন, এখানে যা ছিল, সব আগুন নিয়ে গেছে। কিস্তিতে আনতে হওয়া জিনিসপত্র, সঞ্চয়ের টাকা, বাচ্চাদের কাপড়-কিছুই রইল না। এখন রাত হলে আমরা কোথায় যাব? শিশুদের নিয়ে কীভাবে থাকব?
তার স্বামী ভ্যানচালক মোহসিন আলী জানান, ঘরে আগুন লেগেছে শুনে ছুটে এসেছি। কিন্তু তখন কিছু বাঁচানোর সুযোগ ছিল না। সব শেষ। এখন পরিবার নিয়ে কোথায় আশ্রয় নেব, কিভাবে রাত কাটাবভাবতেই মাথা ঘুরে যায়।
মাস দুই আগে বস্তিতে এসে থাকছিলেন দিনমজুর শামসুল ইসলাম। সামান্য সম্বল গড়ে তুলতেই আগুনে সব শেষ। তিনি বলেন, “আগুন এত দ্রুত ছড়িয়েছিল যে কিছুই বের করতে পারিনি। চারদিকে ধোঁয়া আর আগুনে দম বন্ধ হয়ে আসছিল।
রাতে কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা বড় মানুষ, যেমন-তেমন কাটে। কিন্তু বাচ্চাদের নিয়ে বিপদ হয়েছে। ওরা খামারবাড়ির মাঠের পাশে ফুফুর সঙ্গে বিছানা পেতে শুয়ে রাত কাটিয়েছে।
ঘর হারিয়ে বাইরে থাকার পাশাপাশি খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি ক্ষতিগ্রস্তদের পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে। স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী ও কয়েকটি সংগঠন খাবার-পানি দেওয়ার চেষ্টা করছে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন জানান, এলাকার দুই হাজারের মতো মানুষ সব হারিয়ে রাস্তার পাশে, খোলা মাঠে রাত কাটিয়েছে। কারো পক্ষে এত মানুষের জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তবুও কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সামাজিক সংগঠন খাবার-পানি দিচ্ছে, কিন্তু তা অপর্যাপ্ত।”
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের কয়েকজন প্রতিনিধি রাতে খাবার-পানি দিয়েছেন। কিছু সামাজিক সংগঠনও চেষ্টা করছে। কিন্তু এত মানুষের সামনে তা সামান্যই।
মন্তব্য করুন
