

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সাতক্ষীরা শহরে “বৃত্তি উৎসব” এখন শিক্ষা-বাণিজ্যের নতুন রূপ নিয়েছে। শহরের নামিদামি কোচিং সেন্টারগুলো বৃত্তি পরীক্ষার নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ঠেলে দিচ্ছে। অভিভাবকদের প্রতিযোগিতার মনোভাবকে পুঁজি করেই গড়ে উঠছে এই বাণিজ্যিক জাল।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে সাতক্ষীরা শহরের নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে “বেসিক কোচিং সেন্টার” আয়োজিত বেসিক বৃত্তি উৎসব–২০২৫ পরীক্ষা ঘিরে দেখা যায় চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা।
সকাল থেকেই ভিড়ে ঠাসা স্কুল প্রাঙ্গণ ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ, প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে বসানো হয়েছে একই কক্ষে। পর্যাপ্ত চেয়ার–টেবিল নেই, পানির ব্যবস্থাও ছিল না। গরম ও ভিড়ে ছোট ছোট শিশুরা কান্নায় ভেঙে পড়ে।পরীক্ষা শেষে স্কুলের বাইরে সৃষ্টি হয় হাহাকার। কেউ সন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না, কেউ স্কুলগেটের বাইরে ঠাসাঠাসি ভিড়ে বাচ্চার নাম ধরে ডাকছেন।
এক অভিভাবক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার মেয়েটাকে পাচ্ছিলাম না প্রায় আধাঘণ্টা। ভিড়ের মধ্যে ওর কান্না শুনে খুঁজে পেলাম। এই অব্যবস্থাপনা যদি স্কুলে হয়, তাহলে আমরা কোথায় নিরাপদ?
অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ফি নেওয়া হয়েছে—যার মোট পরিমাণ প্রায় তিন লাখ টাকা। অথচ এই অর্থের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
অভিভাবক গোলাম সাকলাইন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা শিক্ষা নয়, সরাসরি বাণিজ্য। শত শত শিশু একত্রে পরীক্ষা দিচ্ছে কোনো সুরক্ষা বা তদারকি নেই। শুধু টাকার লেনদেন।
আরেক অভিভাবক নাদিম সাকের বলেন, আমরা নিজেরাই সন্তানদের বিপদে ঠেলে দিচ্ছি। সমাজে ‘আমার ছেলে-মেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে এই অহংকারের জন্যই আমরা তাদের অযৌক্তিক প্রতিযোগিতায় পাঠাচ্ছি। কোচিংগুলো সেটাকেই পুঁজি করছে।
সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও এক অভিভাবক এডভোকেট কামরুজ্জামান ভুট্টো বলেন, নবারুণ বিদ্যালয়ে ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আয়োজকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকার বেশি সংগ্রহ করেছেন, অথচ খরচ হয়েছে দেড় লাখের বেশি নয়—বাকি টাকাই মুনাফা।
তবে বেসিক কোচিং সেন্টারের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়টি আজ শুক্রবারের জন্য দুই হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছি।
নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ দেড় হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারে। আয়োজকদের সেটিই জানানো হয়েছিল। তারা বেশি শিক্ষার্থী নিয়েছে কিনা, তা আমি জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। তিনি আরও জানান,ভাড়ার বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কেবল বিদ্যুৎ খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
