মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রায়পুরের প্রাইভেট হাসপাতালে চলছে অনিয়মের রাজত্ব

মাহবুব হোসেন রনি, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৬ পিএম
রায়পুর সরকারি হাসপাতালের সামনে সারিবদ্ধভাবে ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল।
expand
রায়পুর সরকারি হাসপাতালের সামনে সারিবদ্ধভাবে ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অনিয়ম দিনদিন বেড়েই চলছে। প্রায় দুই বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সিভিল সার্জন কার্যালয় এ উপজেলায় অভিযান চালায়।

তখনই বেশ কিছু হাসপাতালে ছাড়পত্র না থাকা, অদক্ষ টেকনিশিয়ান, অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, সতর্ক করা এবং কিছু কেন্দ্রকে সাময়িকভাবে বন্ধও করা হয়।

তবে এরপর দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আর কোনো অভিযান না হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা খাতে অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ- ভালো সেবার আশায় প্রাইভেট হাসপাতালে গেলেও অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনাই দেখতে হয়। তাহলে রোগীরা যাবে কোথায়? -এমন প্রশ্ন উঠছে সচেতন মহলে।

লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, খুব শিগগিরই বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

তারা বলেন, আমরা যখনই অভিযানে যাই- অনিয়ম পাওয়া গেলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ, জরিমানা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হয় না।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, রায়পুর মর্ডান হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়দের মাধ্যমে রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান, নার্স ও রিসেপশনিস্টদের রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে আইডিয়াল মেডিকেল সার্ভিসে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগের টেস্টের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ায় একাধিক রোগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লাইসেন্স ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা নেই। ছোটখাটো সমস্যা হলে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।

রক্তযোদ্ধা সজীব হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,২৫ বার রক্ত দিয়েছি মানুষের জন্য। কিন্তু মডার্ন হাসপাতালে রক্ত দিতে এসে আমাকেই চারবার সুই ফুটিয়ে অসুস্থ করে ফেলেছে! এমন অব্যবস্থাপনা ও অবহেলা মেনে নেওয়ার মতো নয়।

প্রবাসী কাওসার আহমেদ রাসেল বলেন, রায়পুরের প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থা ভয়াবহ দুর্বল। দক্ষ ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিস্টের ঘাটতি স্পষ্ট। অযথা সিজার করানোসহ অনভিজ্ঞ স্টাফের উপর নির্ভরশীলতা রোগীদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বাহারুল আলম বলেন, কিছু অনিয়ম আছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া অভিযান পরিচালনা সম্ভব নয়। তারপরও বিষয়গুলো নজরে রাখা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, খুব দ্রুত সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে অভিযান চালানো হবে। অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X