

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করি’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে আন্তর্জাতিক নারী প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে র্যালি, আলোচনা সভা ও অদম্য নারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলা আখতার।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিসান আলী,উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃরাশেদুজ্জামান মিয়া,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিকাশ রায়,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন।
সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তানজিলা আখতার বলেন, জাতীয় রোকেয়া দিবসের এই মহিমান্বিত আসরে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।
বেগম রোকেয়া শুধু একজন সাহিত্যিক বা নারীজাগরণের অগ্রদূতই নন তিনি ছিলেন এক অনন্য দূরদর্শী চিন্তার প্রতীক, যিনি সমাজকে দেখিয়েছেন নারী শুধু পরিবার নয়, রাষ্ট্র ও সভ্যতারও শক্তি।
আজকের বাংলাদেশের নারীরা রোকেয়ার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে। শিক্ষা, প্রশাসন, চিকিৎসা, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। সরকার নারীর ক্ষমতায়নে অসংখ্য উদ্যোগ নিয়েছে, আর আমাদের দায়িত্ব হলো -এসব সুযোগ যেন প্রত্যেক নারী, বিশেষ করে গ্রামের সাধারণ নারীর দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়।
আমি বিশ্বাস করি, আত্মবিশ্বাসই নারীর সবচেয়ে বড় শক্তি। পরিবারের সহযোগিতা, সমাজের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিক্ষার আলো যদি প্রতিটি নারীর কাছে পৌঁছায়, তবে রোকেয়ার স্বপ্নের 'সমতার সমাজ' বাস্তবে গড়ে উঠবে।
এই দিনে আমি মেয়েদের বলবো নিজেকে কখনো ছোট ভাববে না। স্বপ্ন দেখো, শিক্ষা গ্রহণ করো, এবং নিজের সক্ষমতাকে প্রমাণ করো। আর ছেলেদের বলবো—নারীকে সহযোগী হিসেবে দেখো, প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নয়।
বেগম রোকেয়ার শিক্ষা, আদর্শ ও প্রেরণা হোক আমাদের পথচলার চালিকা শক্তি।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল আমিন,উপজেলা প্রকৌশলী চাতুমি কইলা না যে আমরা জাহিদুল ইসলাম,উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরকারি প্রকৌশলী হাসিফুর রহমান নাদিম এবং সাংবাদিক রবীন্দ্র সরকার। বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে সকালে র্যালি বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
তো আলোচনা সভায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্যোগে ৫ জন অদম্য নারীকে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তারা নিজেদের সংগ্রাম, সাফল্য ও জীবনের অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প তুলে ধরেন।
নারী হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- মোছা:নাসরিন আক্তার (অর্থনৈতিক সাফল্য)ব্যবসার মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের গল্প তুলে ধরেন।
নুরজাহান বেগম (শিক্ষা ও চাকুরী) শিক্ষা ও কর্মজীবনে প্রতিকূলতা জয় করার অভিজ্ঞতা জানান। ফাল্গুনী রানী বিশ্বাস(সফল জননী নারী)পরিবার, সন্তান ও দায়িত্ব সামলে এগিয়ে যাওয়ার গল্প উপস্থাপন করেন।
নাসরিন আক্তার (নির্যাতন জয়ী নারী) নির্যাতন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নতুন জীবনের সংগ্রাম ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।শাহানারা চৌধুরী (সমাজ উন্নয়ন) সমাজসেবা ও নারীর উন্নয়নে কাজ করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন জাদুকর শৈবাল পাল দিপু।
বক্তারা বলেন, বেগম রোকেয়ার আদর্শ অনুসরণ করে সমাজে নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অগ্রগতির জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
মন্তব্য করুন
