

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানোর ঘটনায় যুবক রায়হান মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৮টায় তার বন্ধু খাজা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান মারা যান।
ঘটনার সময় রায়হান উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকায় নিজেই শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগান।
এ ঘটনা সন্ধ্যার পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, তার শরীরের অধিকাংশ জায়গা পুড়ে হাত ও পায়ের ত্বক খসে পড়ছে। তখনই তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল।
রায়হান মিয়া ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকার চান মিয়ার ছেলে। প্রায় ৮–৯ বছর আগে তিনি একই ইউনিয়নের বড় দিঘিরপার গ্রামে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। তবে রায়হান অনলাইন জুয়া ও অন্যান্য নারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন।
মাস দুয়েক আগে স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে ধরা পড়েন। পরে শাশুড়ির চাপেই স্ত্রী আদুরী তাকে উদ্ধার করে। ঘটনার সপ্তাহ না পেরুতেই রায়হান আরেক নারীকে বিয়ে করতে চাইলে স্ত্রীকে চাপ দেন।
মাস খানেক আগে রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হয়নি। রায়হান স্ত্রীকে মারপিট, চুল ধরে টানাহেঁচড়া এবং বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার চেষ্টা করেন। দুই–তিন দিন পর আবার মারপিট করলে আদুরী দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। এসব ঘটনার শ্বশুর-শাশুড়ির সামনে হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার দিন সকালে রায়হানের বাবা চান মিয়া ও তার ভাগ্নে ছেলে রায়হানের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে পুত্রবধূ বাড়িতে যেতে রাজি ছিলেন। কিন্তু ছেলের মারপিটের কারণে বাবার অনুমতি ছাড়া তারা বাড়িতে যাননি। পরে রায়হান শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন এ খবর পান বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে।
স্থানীয়রা জানান, রায়হান আগুন লাগানোর পর পুকুরে লাফ দেন। এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, “মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রায়হানের শ্বশুর বাড়িতে তার বাবা চান মিয়া এবং ভাগ্নে উপস্থিত ছিলেন। কথা ছিল খাওয়া-দাওয়া সেরে বউকে নিয়ে ফিরবেন। পরে ফোনে কথা বলার সময় অসৌজন্যমূলক বাক্য বলায় তারা বউ ছাড়াই চলে যান।”
রায়হানের বাড়িতে গিয়ে তার দুলাভাই সবুজ মিয়া গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি ছিলেন না। ঘটনার সময় উপস্থিত রায়হানের বোন গণমাধ্যমকে বলে, ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে পোস্ট করলে তাকে মারধর করার চেষ্টা হতো।
ধোপাডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “এক বাপের এক বেটা হলে যা হয়, তাই হয়েছে। তবে তার অনলাইন জুয়া বা অন্য আসক্তি বিষয়টি এড়িয়ে যান।”
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আ. হাকিম আজাদ বলেন, “সে নিজেই ঘটনা ঘটিয়েছে। এরপর আর কে অভিযোগ দেবে বলুন।”
মন্তব্য করুন