

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


গ্রামীণ দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি হলো ভিডব্লিউবি (VWB) — ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট।
এর আগের নাম ছিল ভিজিডি (VGD) বা ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট। এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি দুই বছর পরপর সমাজের দুঃস্থ নারীদের নির্বাচন করা হয় এবং তারা ২৪ মাস ধরে খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পান।
তবে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীরা এবার পেয়েছেন খাবার অনুপযোগী লালচে চাল। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপকারভোগীদের অভিযোগ, এই চাল খাওয়ার নয়—এটা যেন হাঁস-মুরগির খাবার!
জানা যায়, চলতি অর্থবছরে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে মোট ২ হাজার ৭৩৮ জন নারী এই কর্মসূচির আওতায় এসেছেন। এর মধ্যে তারাপুর ইউনিয়নে কার্ড পেয়েছেন ১৮২ জন নারী। এর আগের মাসগুলোতে তারা ভালো মানের চাল পেলেও গত মঙ্গলবার, বুধবার ও বাদ পড়া কিছু নারী বৃহস্পতিবার যে চাল পেয়েছেন, তা ছিল নিম্নমানের।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিম্নমানের চালের কারণে কার্ডধারী নারী কিংবা তাদের স্বামী-সন্তানরা ব্যাগ বাছাই করতে ব্যস্ত। চাল হাতে নিয়ে অনেকে পরখ করে দেখছেন এবং চালের মান দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
উপকারভোগী ইয়ামিন নামের এক নারী ইউনিয়ন পরিষদে চাল নিতে এসে বলেন, “আমরা গরিব বলেই কি আমাদের কোনো দাম নেই? এই পচা চালের ভাত আমরা কীভাবে খাব? এটা একেবারেই পচা—হাঁস-মুরগির খাবার।”
আরেক নারী জানান, “বিভিন্ন বস্তা দেখে চাল বাছাই করে বাড়িতে এনেছি। কিন্তু বাড়িতে এনে দেখি চালের মান খুব খারাপ, এর ভাত খাওয়া যায় না।”
চাল সংরক্ষণের অবস্থাও ছিল নাজুক। গুদামে স্তূপাকারে রাখা বস্তাগুলোর ভেতরের চাল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “উপকারভোগী নারীদের অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন চালের রং লালচে এবং তা খাওয়ার উপযোগী নয়। আমি বিষয়টি খাদ্য কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। আশা করি ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়।”
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুমি কায়ছার বলেন, “চালের মান খারাপের বিষয়টি কেউ আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। যদি এমনটি হয়ে থাকে, তাহলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্য উৎস থেকে চাল সংগ্রহ করা হবে।”
বামনডাঙা খাদ্যগুদাম থেকে এসব চাল সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানান সুন্দরগঞ্জ খাদ্য পরিদর্শক (ওসি এলএসডি) মো. কাইয়ুম খান। তিনি বলেন, “ভিডব্লিউবির চালের মান খারাপ হওয়ার কথা নয়। তারপরও যদি নিচের দিকের কিছু বস্তার চাল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে থাকে, তাহলে তা পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।”
দুঃস্থ নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে পরিচালিত এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ব্যাহত না হয়—এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। তারা চান, পরবর্তী মাসগুলোতে যেন উপকারভোগীরা ভালো মানের চাল পান এবং শান্তিতে দু’বেলা ভাত খেতে পারেন।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
