শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেকনাফে স্কুল শিক্ষার্থী অপহৃত, ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২০ পিএম
expand
টেকনাফে স্কুল শিক্ষার্থী অপহৃত, ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

কক্সবাজারের টেকনাফে জীবিকার তাগিদে টমটম চালানো সপ্তম শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী মো. রিয়াজকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। অপহরণের তিন দিন পার হলেও এখনো তার কোনো খোঁজ মেলেনি। অপহরণকারীরা ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানিয়েছেন ভিকটিমের পরিবার।

অপহৃত শিক্ষার্থী মো. রিয়াজ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে এবং লেদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

ভিকটিমের পিতা আব্দুর রশিদ জানান, গত ২১ অক্টোবর বিদ্যালয় ছুটির পর রিয়াজ বাড়ি ফিরে টমটম নিয়ে জীবিকার জন্য বের হয়। সন্ধ্যা গড়িয়েও যখন ফিরে আসেনি, তখন খোঁজাখুঁজি শুরু করি কিন্তু কোনো হদিস পাইনি। পরে টেকনাফ থানায় অভিযোগ দায়ের করি। দুই দিন পর গভীর রাতে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল করে জানানো হয়— ছেলে রিয়াজকে জীবিত পেতে হলে ১২ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে।

তিনি আরও বলেন,আমরা গরীব মানুষ, দিনমজুরির টাকায় সংসার চলে। এত টাকা কোথায় পাব? ছেলেকে কীভাবে উদ্ধার করব বুঝতে পারছি না।স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, এখানে অপহরণ ও ডাকাতি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় এসব অপহরণকারী দল সক্রিয়। মুক্তিপণ না দিলে কাউকে তারা ছাড়ে না।

লেদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাস্টার জামাল উদ্দিন জানান,রিয়াজ আমাদের স্কুলের নিয়মিত ছাত্র। এমন একটি দরিদ্র পরিবার থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি জীবিকার তাগিদে টমটম চালানো বালক অপহৃত হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। তাকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছি।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলী বলেন,টেকনাফে প্রতিনিয়ত অপহরণ বাণিজ্য চলছে, প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেই। রিয়াজকে উদ্ধারে জরুরি ভিত্তিতে অভিযান চালানো উচিত।

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায় বলেন,অপহৃত রিয়াজকে উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে টেকনাফে কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ দেড় থেকে দুই শতাধিক মানুষ অপহরণ ও ডাকাত দলের কবলে পড়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুক্তিপণ দিয়েই তারা মুক্তি পেয়েছেন, আর যারা দিতে পারেননি— তাদের কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।এ অঞ্চলে বেড়ে চলা অপহরণ-ডাকাতির ঘটনায় সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন