

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সারাদেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ পুনরুদ্ধার ও সচলের দাবিতে নদীপথে প্রতীকী যাত্রা করছে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন ‘তরী বাংলাদেশ’।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ৬টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর আনন্দবাজার ঘাট থেকে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে ‘তরী বাংলাদেশ’। পরে বিকেল ৪টায় সদরঘাটে বিআইডব্লিউটিএর নতুন টার্মিনাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘নদী–সুরক্ষা বিষয়ক মতবিনিময় সভা’ করে সংগঠনটি। এতে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী, গবেষক, নৌপরিবহন বিশেষজ্ঞ, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সদস্যরা অংশ নেন।
সভার শুরুতে তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “আমাদের দেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ নৌপথ ছিল। কিন্তু বর্তমানে ৬ হাজার কিলোমিটার আছে। বাকি ১৮ হাজার কোথায় গেল?” তিনি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি এই প্রশ্ন রেখে দেশের দীর্ঘ নৌপথ পুনরুদ্ধার এবং নদীর দখল–দূষণ প্রতিরোধে আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় লেখক ও সম্পাদক গাজী তানভীর আহমদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, “একজন ঋণখেলাপি যদি নির্বাচনে অযোগ্য হয়, সেক্ষেত্রে নদী দখল–দূষণকারী কেন অযোগ্য হবে না? নদী রক্ষা কমিশনের সুপারিশ ছিল— নদী দখলকারী নির্বাচনে যোগ্য বিবেচিত হবে না। এটা কার্যকর করা দরকার। মহামান্য হাইকোর্ট নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন। এ অর্থে নদীর দখল–দূষণকে প্রাণহত্যার মানদণ্ডে বিবেচনা করতে হবে। আমাদের সমাজে এমন বোধ তৈরি করতে পারলে নদী দখল–দূষণ অনেকাংশেই কমে যাবে। নদীগুলো ব্যাপকভাবে দখল করা হচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাব–প্রতিপত্তি আর ছত্রছায়ায়। এটা রোধ করা জরুরি।”
তিনি তিতাসে নৌ–যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি সারাদেশে নৌপথের সম্প্রসারণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
সম্পাদক ও বহুমাত্রিক লেখক মোস্তাফিজ শফি বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে দেশের সব অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে নদীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু আজ আমাদের নদীগুলো ভালো নেই। নদী দখল–দূষণকারীরা যেন ক্ষমতার মসনদে বসতে না পারে, সেজন্য আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।”
নদীভিত্তিক সংগঠন রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, “নদী ভালো থাকলে নদীকে আমরা বহুমাত্রিক ব্যবহারে নিতে পারি— এটা তরী বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে। এজন্য নদীকে কীভাবে ভালো রাখা যায়, সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। অতীতে দেশের স্বীকৃত নৌপথ ২৪ হাজার কিলোমিটার বলা হলেও এর বাইরে সারা দেশে আরও অনেক নৌপথ রয়েছে, যা হিসেবে আসেনি। দীর্ঘ এই নৌপথ উদ্ধার ও সচল করার জন্য আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাসের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এই আন্দোলন। আমি আশা করবো, ৬৪ জেলা থেকেই তরী বাংলাদেশের মতো নৌপথ সচলের দাবি নিয়ে ঢাকায় আসুন, আর ঢাকায় আসার মাধ্যমেই পূর্ণতা পাবে এই আন্দোলন।”
পরে শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বুড়িগঙ্গা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শন শেষে পুনরায় বুড়িগঙ্গা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর অভিমুখে রওনা হয় তরী বাংলাদেশ।
আয়োজকেরা জানান, নৌপথ দখল, দূষণ ও নাব্যতা সংকটে বিপন্ন নদীগুলোর অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে এই প্রতীকী যাত্রা আয়োজন করা হয়েছে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
