সোমবার
১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সোমবার
১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাড়াইলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক 

তাড়াইল(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক 
expand
আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক 

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় চারিদিকে এখন সোনালি রঙের ছোঁয়া। মাঠজুড়ে দুলছে পাকা আমন ধানের শীষ। এ দৃশ্য যেন প্রকৃতির সোনালি হাসি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশায় মুখে হাসি ফুটেছে কৃষকদের।শরতের রোদে সোনালি ধানের ঢেউ খেলছে মাঠে মাঠে। কৃষকের মুখে হাসি, চোখে আনন্দের আলো— বাম্পার ফলনের স্বপ্ন এখন বাস্তব।

সোমবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে— বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাকা ধানের শীষ বাতাসে দুলছে। যেন সোনার বিছানা পেতে রেখেছে প্রকৃতি। কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কাটা-মাড়াইয়ের প্রস্তুতিতে।

তাড়াইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে মোট ৭ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এর মধ্যে হাইব্রিড জাত ৫৩০ হেক্টর, উফশী জাত ৭ হাজার ২৪০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাত ৫ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ৭ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ।তাড়াইলের বিস্তীর্ণ মাঠে এবারের আমন ধান দিয়েছে আশাতীত ফলন।অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক চাষপদ্ধতির কারণে ফলন বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

দামিহা ইউনিয়নের কাজলা গ্রামের কৃষক একে মাইনুজ্জামান নবাব বলেন, “ধানের চারা রোপণের পর থেকে জমিতে সার ও কীটনাশক ঠিকভাবে প্রয়োগ করেছি। এখন ধান পেকে গেছে, ফলনও খুব ভালো হবে বলে আশা করছি।”একই গ্রামের কৃষক রবীন্দ্র সরকার ও কাজল মিয়া জানান, “প্রকৃতি সহায় থাকলে এ বছর আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো ফলন পাবো।”

তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আকুবপুর , আড়াইউড়া,কার্তিকখিলা,আউজিয়া গ্রামের কৃষকরাও একই আশায় বুক বাঁধছেন। তাদের দাবি, সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশের কারণে এবছর ধানের শীষ ভারী হয়েছে।

উপজেলার মাঠপর্যায়ের কৃষি উপসহকারীরা জানিয়েছেন, বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে ধান রোপণ, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই প্রতিরোধ— সব পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।

তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিকাশ রায় বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি। সময়মতো বৃষ্টি, সঠিক পরিচর্যা ও কৃষকদের আগ্রহ—সব মিলিয়ে ফলন ভালো হবে বলে আমরা আশাবাদী। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তাছাড়া কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সরকারিভাবে প্রণোদনা প্রদান করেছি।

যাতে কৃষকেরা তাদের পরিশ্রমের যথাযথ ফল পান। তিনি আরও জানান,তাড়াইলের মাটি ও জলবায়ু আমন ধানের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। সঠিক পরিচর্যা বজায় থাকলে এবার কৃষকরা ভালো লাভবান হবেন।

প্রকৃতির অনুকূল পরিবেশ, কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সরকারি সহায়তায় এবছর তাড়াইলের মাঠে যেন ফুটে উঠেছে সোনালি স্বপ্ন— বাম্পার ফলনের এক আশার গল্প।

ধান কাটার গান ভাসছে তাড়াইলে গ্রামগঞ্জের আকাশে।কৃষকের ঘামের গন্ধে, সোনালি শিষে, ফুটে উঠছে সমৃদ্ধির বাংলাদেশ।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন