

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সম্প্রতি কমলাপুর রেলস্টেশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন কুলি যাত্রীকে ট্রেন ধরাতে সাহায্য করছেন। তবে ভিডিও দেখে অনেকে বিভ্রান্তি হয়েছেন।
ভিডিওতে যে ঘটনার ছবি ধরা পড়েছে, তা আসলে ৮ নভেম্বর রাতে ঘটেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ট্রেন ধরাতে যাওয়া যাত্রী সঙ্গে থাকা মালপত্র নিয়ে দৌড়াতে পারছিলেন না। তখন স্টেশনে উপস্থিত একজন কুলি সাহায্য করতে এগিয়ে যান এবং মালপত্র মাথায় নিয়ে যাত্রীকে ট্রেন ধরাতে সাহায্য করেন।
কুলি জানান, আগে তিনি এমনভাবে অন্য যাত্রীকেও ট্রেন ধরাতে সাহায্য করেছেন। তবে এবার তিনি অতিরিক্ত বখশিশ প্রত্যাশা করেছিলেন।
যাত্রী পারিশ্রমিক দিয়েছেন, কিন্তু সেই কুলি বখশিশ ১০০০ বা ৫০০ টাকা দাবি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, কুলি শুধু সেই অভাবজনিত আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন; তিনি কখনো বলেননি যে, যাত্রী টাকা না দিয়ে পালিয়েছে। যাত্রা তাকে ৫০ টাকা দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার প্রচার কুলির বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে না। আসলে এটি শুধুই অতিরিক্ত বখশিশ না পাওয়ার কারণে কুলি এমন করেছেন।
জানা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এক কুলি ‘বাপ্পিকে নিয়ে হৃদয়স্পর্শী এক ভিডিও। ভিডিওতে দেখা যায়, চলন্ত ট্রেনের দরজার হ্যান্ডেল ধরে দৌঁড়াচ্ছেন বাপ্পি। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “আল্লাহ আপনার কড়া বিচার করবেন,’— এরপরই তিনি ট্রেনের দরজার হ্যান্ডেল ছেড়ে দেন।
ঘটনাটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং নেটিজেনদের মধ্যে সৃষ্টি করে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। তবে জানা গেছে, ভাইরাল এই ঘটনার পেছনে রয়েছে এক ভিন্ন গল্প।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক যাত্রীকে ট্রেনে উঠাতে সাহায্য করেছিলেন বাপ্পি। তিনি যাত্রীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— ট্রেনে উঠিয়ে দেবেন, আর যাত্রী তাকে কিছু পারিশ্রমিক দেবেন। যাত্রীও খুশি হয়ে শুরুতে ১০ টাকা, পরে ৫০ টাকা দিতে চান। কিন্তু বাপ্পি দাবি করেন ২০০ টাকা, কারণ তিনি দূর থেকে দৌড়ে এসে ট্রেন থামিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত যাত্রী ২০০ টাকা দিতে রাজি হলেও, ভাংটি না থাকায় টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ট্রেন ছাড়ার পরও বাপ্পি কিছুদূর দৌড়ে ট্রেনের দরজা পর্যন্ত যান এবং টাকা না পেয়ে আক্ষেপ করে বলেন,
“ওই যে ৫০ টাকা দিছে, ওইটাই নিছি। বলছি— আল্লাহ আপনারে বিচার করবো। আমি যদি লেজ হইয়া থাকি, তাহলে আমি পামু স্যার।”
এই ঘটনায় অনেকে দিনমজুর বাপ্পির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং ন্যায্য পারিশ্রমিক না দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন। তবে কিছু যাত্রী বলছেন, রেলওয়ে স্টেশনে কুলিদের নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক নির্ধারিত না থাকায় প্রায়ই এমন বিরোধের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্টেশন এলাকায় কুলিদের একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে, যারা অনেক সময় যাত্রীদের মালপত্র জোর করে নিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে হয়রানি করে।
মন্তব্য করুন
