

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


গাজায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পরও অন্তত ৬৭ জন ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটির তথ্য মতে, ইসরায়েলি অভিযানে এসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) আলজাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
জেনেভায় শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফ মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস জানান, নিহতদের মধ্যে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে বৃহস্পতিবার চালানো বিমান হামলায় নিহত এক নবজাতকও ছিল। তার আগের দিন আরও সাত শিশুকে প্রাণ হারাতে হয় একই ধরনের হামলায়।
পিরেস বলেন, এ সবই যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ঘটছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত শঙ্কাজনক। এই শিশুরা কেবল সংখ্যা নয়—প্রতিটির ছিল একটি পরিবার, স্বপ্ন, জীবনের আকাঙ্ক্ষা—যা নিষ্ঠুর সহিংসতায় থেমে গেছে।
ইউনিসেফের আগের হিসাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ৬৪ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি শিশু নিহত বা আহত হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রতি মাসে গড়ে ৪৭৫ শিশু আজীবন পঙ্গুত্ব বয়ে আনবে এমন শারীরিক ক্ষতির শিকার হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে মস্তিষ্কে আঘাত, গুরুতর পোড়া ক্ষতসহ নানা জটিলতা। সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজা এখন আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিশু অঙ্গহানি ঘটে এমন অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
শুধু সহিংসতাই নয়, খাদ্য সংকটও শিশুদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। মানবিক সহায়তা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বহু শিশু অপুষ্টি ও ক্ষুধাজনিত সমস্যায় মারা যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সংস্থা জানাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনী গাজাজুড়ে নতুন করে বোমাবর্ষণ করেছে। সেনাদের ওপর হামলার জবাবে এ অভিযান দাবি করছে ইসরায়েল। তবে হামাস বলছে, এটি ‘গণহত্যা পুনরায় শুরু করার ইঙ্গিত’।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) জানায়, তারা গুলিবিদ্ধ ও জটিল আঘাতপ্রাপ্ত বহু নারী-শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছেন। গাজা সিটির একটি মোবাইল ক্লিনিকের নার্স জাহের বলেন, এক নারী পায়ের ভয়াবহ আঘাতে এবং নয় বছরের এক শিশু মেয়েশিশু মুখে গুলিবিদ্ধ ক্ষত নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।
আলজাজিরার তথ্যমতে, অবরোধে গাজার শীতকালীন ত্রাণব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাঁবু, কম্বল, ওষুধসহ মৌলিক সামগ্রীতে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ইউনিসেফ জানায়, বহু শিশু বৃষ্টিসিক্ত অস্থায়ী আশ্রয়ে খোলা আকাশের নিচে শীতের তীব্রতা সহ্য করছে।
পিরেস বলেন, গাজার শিশুদের সামনে বাস্তবতা ভীষণ কঠোর তাদের জন্য কোথাও নিরাপদ স্থান নেই। এই দুর্ভোগকে বিশ্বের কোনোভাবেই স্বাভাবিক হিসেবে নেওয়া উচিত নয়।
তিনি আরও যোগ করেন, “শীত এগিয়ে আসায় তাদের দুর্দশা আরও বাড়বে। হিটার নেই, পর্যাপ্ত কম্বল নেই—শিশুরা রাতভর ঠান্ডায় কাঁপছে।
মন্তব্য করুন
