মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঋণখেলাপি টিএস আইয়ুবকে ধানের শীষের মনোনয়ন, তোলপাড় যশোর

এনপিবি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব।
expand
কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব।
  • নানা অনিয়মের তথ্য প্রমাণসহ কেন্দ্রকে জানাল তৃণমূল
  • দুদকের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন আইয়ুব
  • নির্বাচনী এলাকায় কমিটি গঠনেও নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ
  • আইয়ুব দম্পতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের একাধিক মামলা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩ নভেম্বর সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ঘোষিত ২৩৭টি আসনের বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে ঘিরে দলে সৃষ্টি হয়েছে নানা বিতর্ক। এ কারণে সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের মাঠের কর্মকাণ্ড ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি। বিশেষ করে মনোনয়নবঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রার্থীদের আচরণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) আরও ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি।

বিতর্কিত যেসব সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ ও অভিযোগ উঠেছে, তাদের অন্যতম একজন প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব। যশোর-৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত এই নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক।

খোজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। অভয়নগর, বাঘারপাড়া উপজেলা ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে তার মনোনয়নকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ সরাসরি কথা বলছেন না, আবার অনেকে দলীয় শৃঙ্খলার কারণে নীরব রয়েছেন।

গত ১৯ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাবর একটি অবহতি করণ পত্র দাখিল করা হয়, যেখানে টিএস আইয়ুবের আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। অভয়নগর থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মজিদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস সাইফুজ্জামান শেখরের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে প্রায় শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন আইয়ুব। এতে টিএস আইয়ুব ও তার স্ত্রী তানিয়া রহমানের ব্যাংক ঋণের তথ্যও উল্লেখ করা হয়— ঢাকা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকে তাদের মোট বকেয়া ১৪৭ কোটি ২৮ লাখ ৬৪ হাজার ২১৪ টাকা। আইয়ুব দম্পতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের একাধিক মামলার কথাও পত্রে উল্লেখ রয়েছে।

স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর যশোর-৪ আসনে চাঁদাবাজির অভিযোগ বৃদ্ধি পায়। একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অভয়নগর ও বাঘারপাড়ায় কমিটি গঠনে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ করেছেন টিএস আইয়ুব। পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন তাঁর সঙ্গে রাজনীতি করা নেতাকর্মীরাই এখন প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছেন এবং বিভিন্ন অবস্থানে আইয়ুবের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন।

অভয়নগর থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মজিদ এনপিবি নিউজকে বলেন, ঋণখেলাপি হিসেবে তথ্যপ্রমাণ থাকায় টিএস আইয়ুবের বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে জানিয়েছিলাম। এখনও কোনো ব্যবস্থা বা পত্রের উত্তর পাইনি দল থেকে।

সম্প্রতি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমকে জানান, “বিএনপির মতো বড় দলে একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকাই স্বাভাবিক। বেশ কিছু আসনে যোগ্য প্রার্থী বাদ পড়তে পারেন। বিষয়টি হাইকমান্ড খতিয়ে দেখছে।”

অভিযোগের বিষয়ে এনপিবি নিউজ থেকে বিএনপি নেতা প্রকৌশলী টিএস আইয়ুবের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তায় জানতে চাইলেও, কোনো উত্তর দেননি টিএস আইয়ুব।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X