

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


২১ নভেম্বরের ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প পুরো দেশজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করে। এর পর মাত্র দেড় দিনের ব্যবধানে আরও তিনটি ক্ষুদ্র কম্পন অনুভূত হয়- যার মাত্রা ছিল ৩.৩, ৩.৭ ও ৪.৩।
উদ্বেগের বিষয় হলো, সাম্প্রতিক সব ভূমিকম্পই ঢাকা ও এর আশপাশে উৎপত্তি হয়েছে। প্রথমটি নরসিংদীর মাধবদী এলাকায়, আর বাকিগুলো বাইপাইল, নরসিংদী ও ঢাকার বাড্ডা অঞ্চলে শনাক্ত হয়।
আগে বেশিরভাগ বড় কম্পন ভারত বা মিয়ানমারের দিক থেকে আসত। কিন্তু এখন দেশের অভ্যন্তরেই উৎস পাওয়া যাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও সংলগ্ন এলাকায় ৭৬টি ভূমিকম্প নথিভুক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মত, নরসিংদীর সাম্প্রতিক কম্পনটি ছিল ইন্ট্রাপ্লেট ভূমিকম্প—অর্থাৎ একই প্লেটের ভেতর ঘটে যাওয়া ঘটনা।
বাংলাদেশ তিনটি প্রধান টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান করছে-ভারতীয় প্লেট, ইউরেশীয় প্লেট এবং বার্মা মাইক্রোপ্লেট।
জিপিএস পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন ফল্ট লাইনে প্রতিবছর কয়েক মিলিমিটার করে সঞ্চালন হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত-
দৌকি ফল্ট: সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ।
মধুপুর ফল্ট: ঢাকা ও টাঙ্গাইল।
চট্টগ্রাম–মিয়ানমার ফল্ট: চট্টগ্রাম ও উপকূলীয় অঞ্চল।
ঢাকার মাটি ও স্থাপনার সমস্যা
ঢাকার মাটি তুলনামূলক দুর্বল, নরম এবং পানিভর্তি স্তরে গঠিত—যা ভূমিকম্পের কম্পনকে আরও বাড়িয়ে দেয়। প্রচুর ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে কিছু এলাকায় লিকুইফ্যাকশনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাথে জনসংখ্যার ঘনত্ব, পুরোনো ও অপরিকল্পিত ভবন, সংকীর্ণ সড়ক—সব মিলিয়ে ঝুঁকি আরও বেড়েছে।
পর্যবেক্ষণ ঘাটতি ও দুর্বল প্রস্তুতি
দেশে ভূমিকম্প মাপার স্টেশন খুবই সীমিত। ফলে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও তথ্যভিত্তিক সতর্কতা দেয়া কঠিন। সাম্প্রতিক কম্পনগুলোতে দেখা গেছে—বেশিরভাগ মানুষ ঝুঁকিমুক্ত থাকার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিল না।
সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কা
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বড় ধরনের কোনো কম্পন হলে পরিবহনব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি ও স্যানিটেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। অর্থনীতির ওপর এর প্রভাবও হবে ভয়াবহ।
মন্তব্য করুন
