

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আবারও পৃথিবীমুখী এক গ্রহাণুকে ঘিরে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামের একটি মহাজাগতিক পাথরখণ্ড ২০৩২ সালে পৃথিবীর কাছ দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।
যদিও সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা খুব কম, তবুও সামান্য ঝুঁকিও বিজ্ঞানীদের চিন্তিত করছে।
তাদের হিসাবে, পৃথিবীতে এটির আঘাত হানার সম্ভাবনা ২.১ শতাংশ, অর্থাৎ ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই এটি নিরাপদে পাশ কাটিয়ে যাবে। তবে ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর তারিখটি সম্ভাব্য সংঘর্ষের সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নাসার ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভে প্রকল্পের প্রকৌশলী ডেভিড র্যাঙ্কিন জানিয়েছেন, সম্ভাব্য প্রভাব অঞ্চলের মধ্যে থাকতে পারে দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশ। প্রাথমিক ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, নাইজেরিয়া, কলম্বিয়া ও ভেনেজুয়েলা।
গ্রহাণুটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমি থেকে। এর ব্যাস আনুমানিক ১৩০ থেকে ৩০০ ফুটের মধ্যে। বর্তমানে এটি টরিনো স্কেলে ৩ স্তরে রয়েছে — যা ২০০৪ সালের কুখ্যাত ‘অ্যাপোফিস’-এর পর সবচেয়ে উচ্চ সতর্কতার মাত্রা বলে বিবেচিত হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, যদি এটি পৃথিবীতে আঘাত হানে, তাহলে বিস্ফোরণের শক্তি হবে প্রায় ৮ মিলিয়ন টন টিএনটি-র সমান — যা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে প্রায় ৫০০ গুণ বেশি ধ্বংসাত্মক। এমন বিস্ফোরণের অভিঘাত ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় অনুভূত হতে পারে।
তবে অ্যারিজোনার লওয়েল অবজারভেটরির গবেষক টেডি কারেটা মনে করেন, “গ্রহাণুটি পৃথিবীতে সরাসরি আঘাত করার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। আর যদি এমন আশঙ্কা দেখা দেয়ও, আগেভাগেই মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।”
পূর্বে ২০০৪ সালে ‘অ্যাপোফিস’ নামের এক গ্রহাণু নিয়েও একই ধরনের উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। তখনও ২.৭ শতাংশ ঝুঁকি থাকলেও, পরবর্তীতে সেটি নিরাপদে পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যায়।
বর্তমানে জাতিসংঘের ‘প্ল্যানেটারি ডিফেন্স প্রটোকল’ সক্রিয় রয়েছে এবং বিজ্ঞানীরা সম্ভাব্য প্রতিরোধমূলক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রয়োজনে ‘কাইনেটিক ইমপ্যাক্ট’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এর গতিপথ পরিবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে—যা ২০২৩ সালে নাসার ডার্ট মিশনে সফলভাবে পরীক্ষিত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন
