

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি এখন আর কেবল খেলনা বা সজ্জাসামগ্রী তৈরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। গত কয়েক দশকে এই প্রযুক্তি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে মাটি দিয়ে ঘর, কৃত্রিম চামড়া কিংবা পরিবেশবান্ধব বাসনপত্র পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলো এক অনন্য উদ্ভাবন-বাতাস থেকে পানি তৈরি করার যন্ত্র।
জার্মানির এফএইচ মুনস্টার ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস-এর দুই তরুণী, লুইসা গ্রাউপে ও জুলিকা শোয়ার্জ, এই ব্যতিক্রমধর্মী যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের তৈরি থ্রিডি প্রিন্টেড ডিভাইসটির নাম ‘ওয়াটার ফ্রম এয়ার’। উদ্ভাবকদের দাবি, এই যন্ত্র প্রতিদিন প্রায় ছয় লিটার বিশুদ্ধ পানি তৈরি করতে সক্ষম-তাও আবার বিদ্যুৎ ছাড়াই, শুধুমাত্র বাতাসের আর্দ্রতা ব্যবহার করে।
যন্ত্রটির অধিকাংশ অংশ থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে তৈরি। এটি বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে, পানির অণু ধরে রাখে এবং সেগুলোকে ঘনীভূত করে তরল পানিতে রূপান্তরিত করে। পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়েছে এক ধরনের আধুনিক উপাদান, ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (MOF), যা বাতাসের ক্ষতিকর দূষণকারী উপাদানগুলো অপসারণে সহায়তা করে। ফলে অতিরিক্ত কোনো ফিল্টারের প্রয়োজন পড়ে না।
ডিভাইসটির নিচের অংশে একটি ছোট কল রয়েছে, যেখান থেকে উৎপন্ন পানি সহজেই সংগ্রহ করা যায়। উদ্ভাবকদের মতে, এই প্রযুক্তি শুষ্ক বা পানির অভাবে ভোগা এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সহজ উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চাইলে আমি এই খবরটির জন্য একটি আকর্ষণীয় শিরোনাম, এক বাক্যের সারাংশ, এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জন্য সংক্ষিপ্ত ক্যাপশন তৈরি করে দিতে পারি-তৈরি করে দেব?
আজকের বিশ্বে প্রায় ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে দিন কাটান। শুধু আমেরিকাতেই প্রায় ৪৬ মিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানি পান না। এই বাস্তবতায় এমআইটি (MIT)-এর বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এক অবিশ্বাস্য যন্ত্র-যেটি জানালার আকারের, চলার জন্য বিদ্যুৎ বা সৌর শক্তির দরকার হয় না, আর এটি বাতাস থেকে পানির বাষ্প শুষে বিশুদ্ধ পানি তৈরি করতে পারে।
থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে তৈরি ‘ওয়াটার ফ্রম এয়ার’ নামের যন্ত্রটি এখনো পরীক্ষামূলক ধাপ অতিক্রম করছে। তবে প্রকৌশলীদের মতে, এটি ভবিষ্যতে পানি সংকটে ভোগা মানুষদের জন্য একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর সমাধান হতে পারে। যন্ত্রটি ছোট আকারের এবং সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় এটি পরিবারিক ব্যবহারের জন্যও উপযোগী।
ডিজাইন অনুযায়ী, পুরো যন্ত্রটি একাধিক স্তর নিয়ে গঠিত, যা একটির ওপর আরেকটি বসিয়ে ব্যবহার করা যায়। প্রতিটি অংশই থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি। এর উপরের অংশটি অনেকটা ফ্রেঞ্চ প্রেস কফি মেকারের মতো, যা বাতাস থেকে পানির অণু শোষণ করে। প্রায় এক ঘণ্টা পর ঢাকনাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং যন্ত্রের ভেতরে তাপ উৎপন্ন হয়। এই তাপেই শুরু হয় ঘনীভবন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পানির ফোঁটা তৈরি হয়ে নিচের পাত্রে জমা হয়।
একটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগে এবং এতে ৫০০ মিলিলিটার পানি উৎপন্ন হয়। তবে যন্ত্রটি টানা একদিন চালু রাখলে প্রায় ৬ লিটার বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়-যা চার সদস্যের একটি পরিবারের দৈনিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যন্ত্রটি এখনো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উপযোগী নয়। এতে ব্যবহৃত উপাদান ও প্রযুক্তি নিয়ে আরও গবেষণা চলছে। পাশাপাশি এর পেটেন্ট নিবন্ধনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ফলে বাজারে কবে এটি আসবে বা দাম কত হতে পারে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
সূত্র: পপুলার সায়েন্স
মন্তব্য করুন
